সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সঙ্কট দূর করতে অআগামী অক্টেবরের প্রথম সপ্তাহেই প্রায় ৩৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিতে যাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। ৩৬ হাজার শিক্ষকের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫ হাজার ৩০০ জন এবং প্রাথমিকে ১০ হাজার জন। তবে পদের সংখ্যা কম বা বেশি হতে পারে।
ডিপিই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ২৫ হাজার ৩০০টি পদ নতুন করে সৃষ্টি করা হয়। এসব পদে শিক্ষক নিয়োগ দিতে গত দুই মাস আগে মন্ত্রণালয় থেকে কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি সব কার্যক্রমকে স্থবির করে দেয়। তবে গত জুন থেকে ডিপিই নিয়োগ-সংক্রান্ত প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে।
গণমাধ্যমে বিষয়টি স্বীকার করেছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম আল হোসেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃজন করা হয়েছে। এসব পদে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে আমরা অনেক আগে অধিদফতরকে নির্দেশ দিয়েছি। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদগুলো চিহ্নিত করে সেসব পদে নিয়োগ দিতে বলা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে কাজ শুরু করেছে ডিপিই।
জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিক ও সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে ইতোমধ্যে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি তৈরি করা হয়েছে। আবেদন প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে। আবেদনকারী নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে স্নাতক (সম্মান), স্নাতক (পাস) বা সমমান ডিগ্রি করা হয়েছে। গত বছর অনলাইন আবেদন ফি ১৬৬ টাকা হলেও এবার আবেদন ফি কিছুটা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বুয়েট ও টেলিটক মোবাইল কোম্পানির সহায়তায় আবেদন গ্রহণ, কেন্দ্রে প্রশ্নপত্র পাঠানো, খাতা মূল্যায়ন ও ফল প্রকাশ করা হবে।
আগামী অক্টোবরের মাসের প্রথম সপ্তাহে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। অনলাইন আবেদনের জন্য এক মাস সময় দেয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিপিইর নিয়োগ শাখার উপ-পরিচালক আতিক বিন সাত্তার বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর আমরা নিয়োগ-সংক্রান্ত কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছি। ইতোমধ্যে আবেদন গ্রহণের জন্য ওয়েবসাইট ডেভেলপ (উন্নয়ন) করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে আবেদনকারীর আবেদন সম্পন্ন হলে সার্টিফিকেট ও জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে অটোমেটিক তথ্য যাচাই-বাছাই হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ২৫ হাজার ৩০০ জন নিয়োগ দেয়া হবে। এটি প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন প্রকল্প-৪ (পিইডিপি) এর আওতাভুক্ত হলেও প্রকল্পের মেয়াদ শেষে এ স্তরের শিক্ষকদের রাজস্বখাতে অন্তভুক্ত করা হবে। এছাড়া শূন্য সকল পদে নিয়োগ দিতে আরও ১০ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে দুই স্তরে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি তৈরি তৈরি করা হয়েছে। অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, প্রাক-প্রাথমিকের সময়সীমা দুই বছর ও ভর্তির ক্ষেত্রে চার বছর বয়সসীমা করে গত ১৬ জুন প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব পাঠায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিক স্তর পাঁচ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য এক বছর মেয়াদি শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে। এ স্তরে অর্জিত সাফল্য ও অভিজ্ঞতা অর্জনে চার বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য দুই বছর মেয়াদি করতে একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বর্তমানে এ স্তরে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে।