নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় টানা তিন দিনের বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারে পানিতে বেড়িবাঁধ ভেঙে আটটি ইউনিয়নের ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে মানুষের বসত বাড়ি, পুকুরের মাছ এবং নষ্ট হয়েছে পাকা আউশ ধান।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার (১৯ আগস্ট) থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণ ও অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে হাতিয়ায় উপজেলার নিঝুমদ্বীপ, সোনাদিয়া, তমরদ্দি, সুখচর, চরঈশ্বর, নলচিরা, হরনী ও চানন্দী ইউনিয়নের প্রায় ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, এ বছর বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় ঘূর্ণিঝড় আম্ফান পরবর্তী সময়ে জোয়ারের পানিতে এলাকাগুলো সহজেই প্লাবিত হয়ে পড়ছে। এছাড়া নতুন করে সোনাদিয়া ইউনিয়নের মাইজচরা ও তমরদ্দি ইউনিয়নের ক্ষিরোদিয়া গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারের স্রোতে প্রায় ৬০টি বসত ঘর ভেসে গেছে। অনেকে বেড়িবাঁধের ওপর খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।
আম্ফান পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় সূখচর ইউনিয়নের চরআমান উল্যা, বৌ বাজার, চেয়ারম্যান বাজার, নলচিরা ইউনিয়নের তুপানিয়া, নলচিরা ঘাট এলাকা, চরঈশ্বর ইউনিয়নের তালুকদার গ্রাম, ফরাজী গ্রাম, ৭নং গ্রাম, মাইচ্চা মার্কেট এলাকা প্লাবিত হয়। এসব এলাকার প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।
চরইশ্বর ইউপি সদস্য কামরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন দুবার করে জোয়ারের পানি ঢুকছে। জোয়ারের পানিতে অনেকের বসতবাড়ি ডুবে গেছে, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। অনেকে বসত হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। নলচিরা ঘাটের প্রায় ২০টি দোকান ঘরে পানি ডুকে মালামাল নষ্ট হয়েছে। পাঁচটি দোকান স্রোতের টানে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।
নিঝুম দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নিঝুম দ্বীপে বেড়িবাঁধ না থাকায় প্রায় পাঁচ ফুট জোয়ারের পানির নিচে তলিয়ে গেছে দ্বীপের অধিকাংশ এলাকা। এতে ঘেরের মাছ ভেসে গেছে। ফসলের ক্ষতি ছাড়াও বনের হরিণ লোকালয়ে চলে এসেছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, দ্রুত বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। ফান্ড এলে শিগগরিই কাজ শুরু হবে।
সানবিডি/আরএম/