উত্তর আমেরিকার দেশ কিউবায় বার্ষিক স্বাস্থ্যপরীক্ষা বাধ্যতামূলক। যদি কেউ ক্লিনিকে হাজির না হয়, সে যেখানেই থাকুক তাকে খুঁজে বের করে এনে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে।
ড. কুইভ্যাস হিল নামের একজন চিকিৎসক যেমন বললেন, “আমার নার্স জানে তারা কোথায় থাকে। তারা দৌড়াতে পারবে, কিন্তু পালাতে পারবে না।”
বিভিন্ন পরিবার নির্দিষ্ট চিকিৎসক কিংবা ক্লিনিকের আওতায় থাকে। স্বাস্থ্যপরীক্ষার আওতায় থাকে পরিবারের প্রতিটি সদস্য। রক্তচাপ মাপা, হৃদযন্ত্র পরীক্ষাসহ চাকরি, কর্ম ও জীবনযাত্রা সম্পর্কে তথ্য নেয়া হয়। ঘরবাড়ি, আশপাশের পরিবেশ সম্পর্কেও সতর্কতার সঙ্গে নোট নেন চিকিৎসক। যাচাই-বাছাই করে দেখা হয় পরিবারের সদস্যদের স্বাস্থ্যহানি ঘটে এমন কোনো উপাদান আশপাশে রয়েছে কি না।
বার্ষিক স্বাস্থ্যপরীক্ষণের এসব তথ্য সন্নিবেশ করে চিকিৎসকেরা নির্ধারণ করেন কোন নাগরিক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে, আর কোন নাগরিক ঝুঁকিমুক্ত।
কিউবায় কোনো চিকিৎসক বা ক্লিনিকের আওতায় নির্দিষ্ট কতগুলো পরিবার থাকে। এখানে প্রত্যেকের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে হয় বার্ষিক ভিত্তিতে।
কিউবার এই প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্যসেবা পদ্ধতির বিবরণ উঠে এসেছে রবিবার বিবিসি অনলাইনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কিউবার স্বাস্থ্যসেবা মধ্যম ও নিম্ন আয়ের দেশগুলো তো বটে, বহু ধনী দেশের স্বাস্থ্যসেবাকেও ছাড়িয়ে গেছে। স্বাস্থ্য খাতে মাথাপিছু ৪৩১ মার্কিন ডলার খরচ করে কিউবার শিশুমৃত্যুর হার এখন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে কম। অথচ যুক্তরাষ্ট্র স্বাস্থ্য খাতে মাথাপ্রতি খরচ করে সাড়ে আট হাজার ডলারের বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করছে, ধনী কিংবা গরিব, সব দেশেরই এখান থেকে শেখার আছে।
এক কোটি ১০ লাখ মানুষের জন্য কিউবায় চিকিৎসক আছে ৯০ হাজার। অর্থাৎ প্রতি এক হাজার মানুষের জন্য আটজন ডাক্তার। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি এক হাজার মানুষের জন্য ২.৫ জন এবং যুক্তরাজ্যে রয়েছে ২.৭ জন চিকিৎসক।