তিনটি প্রতিষ্ঠানের এলসিতে অনিয়ম, জালিয়াতি ও মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য খালাশের অপরাধ খুঁজে পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেট। প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো ওয়ান স্টার কর্পোরেশন, রাত্রী ট্রেডিং ও আরজেএম কর্পোরেশন। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক ও ঢাকা কাস্টম হাউজকে পাঠানো চিঠিতে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের তিনটির ব্যাংকে ভূয়া এলসি ও এলসির অপব্যাবহারের প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে শুল্ক মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেট। এর মধ্যে ৪৮, কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ ঠিকানা ব্যবহারকারী আমদানিকারক ওয়ান স্টার কর্পোরেশন উত্তরা ব্যাংক কারওয়ান বাজার শাখার মেয়াদ উত্তীর্ণ এলসি ব্যবহার করে পণ্য খালাশ করেছে। বি/ইতে কোডকৃত এলসিএর মেয়াদ উর্ত্তীনের তারিখ ৩০/০৪/২০১৫ হওয়া সত্ত্বেও কাস্টম হাউসে দাখিলকৃত এলসিতে ৩০/০৮/২০১৫ উল্লেখ্য করে কাস্টম হাউস, ঢাকার সাথে প্রতারণার মাধ্যমে জুলাই, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে উক্ত এলসির বিপরীতে বি/ই দাখিল করে শুল্কায়নপূর্বক পণ্য ছাড় করে।
এদিকে সংশোধনী ছাড়াই এলসিএর মূল্যের চেয়ে দ্বিগুন মূল্যের পণ্য খালাসে একাধিকবার একই এলসি ব্যবহার করেছে রাত্রী ট্রেডিং নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। ১৭৮, নবাবের বাগ, মিরপুর-১ ঠিকানার এই প্রতিষ্ঠানটি এলসি খুলেছিল ইউনাইটেড কমার্সিয়াল ব্যাংক, উত্তরা শাখায়। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের স্টিকারযুক্ত চকোলেট, দই, বাটার, কুকিস বিভিন্ন সুপারশপ যেমন- স্বপ্ন, আগোরা, মিনা বাজারে বিক্রি হলেও কাস্টম হাউসে প্রতিষ্ঠানটির দাখিলকৃত বি/ইতে (বিল অব এক্সচেঞ্জ) এগুলোর উল্লেখ নেই। অর্থাৎ মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এসব পণ্য এনেছে প্রতিষ্ঠানটি।
অপর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আর.জে.এম কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে একেবারে ভূয়া এলসি ব্যবহার করে পণ্য আমদানির তথ্য পেয়েছে এনবিআর। এতে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি এলসি স্থাপনকারী ব্যাংক হিসাবে সাউথইসস্ট ব্যাংক, বনানী শাখার নাম ও এলসি নম্বর ব্যবহার করে কাস্টম হাউস, ঢাকায় ছয়টি বি/ই-এর অনুকূলে আমদানি দলিলাদি দাখিল করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে অত্র দফতরের কর্মকর্তারা ব্যাংকে গিয়ে জানতে পারে এই নামে ওই ব্যাংক শাখায় কোন গ্রাহকই নেই।
এসব বিষয়ে আরো তদন্ত করে কাস্টম অ্যাক্ট-১৯৬৯ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করেছে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কমিশনারেট। এছাড়া আমদানিকারকদের বিআইএন লক করে দেয়া, ইতোমধ্যে আমদানিকৃত ও খালাসের অপেক্ষায় থাকা পণ্য চালানসমূহ রেড চ্যানেলভূক্ত করা এবং উল্লিখিত প্রতিষ্ঠানসমূহের একই সিএন্ডএফ এজেন্ট কুমিল্লা ট্রেডার্স, ৪৮ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করেছে শুল্ক মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেট।
সানবিডি/ঢাকা/রাআ