মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর গণহত্যা চালানোর দায়ে দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গাম্বিয়ার দায়েরকৃত মামলায় সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস।
এ ব্যাপারে বুধবার কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাসোঁয়া ফিলিপে শ্যাম্পে এবং নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টেফ ব্লক এক যৌথ বিবৃতিতে এ ঘোষণা দেন।
এই বিবৃতিতে দেশ দুটি জানায়, তারা মামলার জটিল আইনি বিষয়গুলোতে সহায়তা করবে এবং ধর্ষণসহ যৌন হয়রানি ও নারী নির্যাতনের মতো অপরাধগুলোতে বিশেষ মনোযোগ দেবে।
বিবৃতি আরো বলা হয়, মিয়ানমারের গণহত্যাকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে গাম্বিয়া অত্যন্ত প্রশংসনীয় কাজ করেছে। এই কাজে সহায়তা করা দায়িত্ব মনে করে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস।
এদিকে গাম্বিয়ার পাশাপাশি জাতিসংঘের আদালতে নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব করতে বিশিষ্ট মানবাধিকার আইনজীবী অমল ক্লুনিকে নিয়োগ দিয়েছে মালদ্বীপ।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গত নভেম্বরে রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগ এনে মামলা করে গাম্বিয়া। মামলায় বলা হয়, মিয়ানমার ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক এ আদালতে গণহত্যার দায়ে তৃতীয় মামলা এটি।
গাম্বিয়া ও মিয়ানমার দুই দেশেই ১৯৪৮ সালের জেনোসাইড কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ। জেনোসাইড কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী হিসেবে শুধু গণহত্যা থেকে বিরত থাকা নয় বরং এ ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ এবং অপরাধের জন্য দেশগুলো বিচারের মুখোমুখি হতে বাধ্য।
বিগত ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি সেনা পোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাখাইনে অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী।অভিযানের নামে রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে আগুন, নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা এবং নারীদের গণধর্ষণ করা হয়। মিয়ানমার সেনাদের নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম।