সাত মাস পর ইতিবাচক ধারায় পোশাক রপ্তানি

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২০-০৯-০৫ ২৩:৩৮:৩৯


বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে স্থবির হয়ে পড়া ব্যবসা বাণিজ্য দিন সচল হচ্ছে। ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বিশ্বব্যাপী অর্থতীতির চাকা। ইতিবাঁচক অবস্থানে ফিরছে পোশাকশিল্প। বাড়ছে রপ্তানির কার্যাদেশ।

দীর্ঘ মন্দার পর দেশের তৈরি পোশাক ক্ষাতের রপ্তানি বাড়তে শুরু করেছে। পরপর দুই মাস ৩০০ কোটি ডলার করে পোশাক রপ্তানি হয়েছে। তাতে সাত মাস পর ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে পোশাক রপ্তানি। সর্বশেষ গত আগস্টে রপ্তানি বেড়েছে ৪৭ শতাংশ।

পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির বিষয়ে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থগিত হওয়া রপ্তানি আদেশ সচল হচ্ছে। এর বাহিরে ক্রেতারা নতুন করে মাস্ক ও পিপিই নিচ্ছেন। অন্যদিকে স্থগিত হওয়া আদেশ ফেরার সাথে সাথে নতুন ক্রেতারাও আসছেন । সব মিলিয়ে আগামীতে এই খাতের উদ্যোক্তারা ভালো কিছু আশা করছেন।

পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, গত আগস্টে চলতি বছরের সর্বোচ্চ ৩৩৬ কোটি ৩৩ লাখ মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৪৭ দশমিক ২৫ শতাংশ বেশি। আর জুলাইয়ে ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। তার আগের পাঁচ মাসে (ফেব্রুয়ারি-জুন) রপ্তানি কখনোই ৩০০ কোটি ডলার ছাড়ায়নি।

আগস্ট মাসের প্রথম দিন ঈদের কারণে কোনো পোশাক রপ্তানি হয়নি। পরদিন ১ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। তারপর ধীরে ধীরে রপ্তানি বাড়তে থাকে। ১৩ আগস্ট ২০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়, যা পুরো মাসে সর্বোচ্চ।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়লে গত মার্চে একের পর এক ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিতাদেশ আসতে থাকে। এদিকে দেশেও ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় মাসখানেক কারখানা বন্ধ থাকে। তাতে এপ্রিলে পোশাক রপ্তানি তলানিতে গিয়ে ঠেকে। মাসটিতে ৩৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়, যা গত দুই দশকে সর্বনিম্ন। পরের মাসে রপ্তানি হয় ১২৩ কোটি ডলারের পোশাক। জুনে সেটি বেড়ে ২২৫ কোটি ডলারে ওঠে।

মার্চে পোশাকের ক্রয়াদেশ বাতিল ও স্থগিত হওয়ায় মালিকেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়লে সরকার রপ্তানিমুখী কারখানার শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করে। সেই তহবিল থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কারখানার মালিক ২ শতাংশ সার্ভিস চার্জে ঋণ নিয়ে তিন মাসের মজুরি দিয়েছেন। সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে জুলাইয়ের মজুরি দিতে ঋণ সহায়তা পান মালিকেরা। আগস্ট মাসেও শ্রমিক-কর্মচারীর মজুরি দিতে ঋণ চায় পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। তবে সরকারের তরফ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো মতামত দেওয়া হয়নি।