ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেছেন, যত ক্ষমতাবানই হোন না কেন এই শহরের ফুটপাতে কোন ধরনের নির্মাণসামগ্রী বা অন্য কোন সামগ্রী রেখে ব্যবসা করতে পারবেন না। ঢাকা শহর আমাদের সকলের, আমাদের আদরের। এই ঢাকা শহরে আমরা জীবিকা নির্বাহ করি। ঢাকা শহরকে যত্রতত্রভাবে শেষ করে ফেলবেন, এটি হতে দেওয়া যাবে না।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) গুলশানে সকাল সাড়ে নয়টায় ফুটপাত ও সড়ক থেকে অবৈধ নির্মাণসামগ্রী ও স্থাপনা জব্দ ও নিলাম কার্যক্রম পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা বলেন।
উল্লেখ্য, আজ ডিএনসিসি এলাকার সড়ক ও ফুটপাতে অবৈধভাবে রাখা সামগ্রী উচ্ছেদ ও নিলামে ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলে একযোগে মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালিত হয়। মেয়র আতিকুল ইসলাম গুলশান ৮৬, ৮৭, ৬৭ নম্বর রোড এবং বনানী ১৫ নম্বর রোড পরিদর্শন করে ফুটপাত ও সড়কের উপর রড, ইট ইত্যাদি দেখতে পেয়ে ক্ষুব্ধ হন। পরে ডিএনসিসির মোবাইল কোর্ট কর্তৃক ভবন নির্মাণকারীদের জরিমানা করা হয় এবং নির্মাণসামগ্রী তাৎক্ষণিক নিলামে বিক্রয় করা হয়।
এ সময় মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা দেখেছেন, আমি গত আশুরার দিন রোববার সকাল বেলা বিভিন্ন এলাকায় যাই। তখন দেখেছি ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় ইট, বালি, রডসহ বিভিন্ন ধরনের নির্মাণসামগ্রী রাস্তায়, ফুটপাতে রেখে দিয়েছে। তখন আমরা বলেছিলাম, ৭ তারিখ থেকে অর্থাৎ আজকে থেকে দশটি অঞ্চলে একযোগে সারাদিন এই অভিযান চলবে। আপনারা নিজেরা দেখেন বড় বড় অট্টালিকা করছে, অট্টালিকা হবে ভালো কথা, কিন্তু আমাদের সিটি কর্পোরেশনের ফুটপাতের মধ্যে কোন কিছু তোয়াক্কা না করে, আইনকে কোন ধরনের সম্মান না জানিয়ে, তারা নির্মাণসামগ্রী রেখে দিচ্ছে। এজন্য আমাদের ফুটপাত ভেঙ্গে যাচ্ছে। আমরা সবাই বলেছি, তারপরেও তারা আইনকে তোয়াক্কা করছে না। তাই আমি আমার কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে নির্দেশ দিয়েছি, আজকে যেখানে যে অবস্থায় ফুটপাত ও সড়কে নির্মাণসামগ্রী পাওয়া যাবে, আইন অনুযায়ী এগুলো নিলাম দিয়ে দেওয়া হবে। এই প্রেক্ষিতে নিলাম শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আপনারা ব্যবসা করবেন, ব্যবসা করুন। কিন্তু কেন ফুটপাত ও রাস্তার মধ্যে নির্মাণসামগ্রী রাখবেন। এগুলো রাখার ফলে ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। আমি হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, এই অভিযান প্রতি সপ্তাহে একদিন পরিচালিত হবে।
অবৈধ বিলবোর্ড সম্পর্কে মেয়র বলেন, আমি আরেকটা বার্তা দিতে চাচ্ছি আপনাদের মাধ্যমে, ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় যত্রতত্রভাবে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ডে ভরে গেছে। সাইনবোর্ডের জন্য কেউ কোন পারমিশন নিচ্ছেন না। আমি বিনয়ের সাথে আপনাদেরকে অনুরোধ করছি, আপনারা নির্ধারিত ট্যাক্স সিটি কর্পোরেশনে দিয়ে তারপরে সাইনবোর্ড লাগাতে পারেন। যে কোনো ধরনের সাইনবোর্ড, বিলবোর্ডে সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়ে ট্যাক্স দিয়ে তারপরে লাগাতে পারবেন। তা না হলে আগামী ১৪ তারিখ হতে যত ধরনের সাইনবোর্ড আছে, সে সাইনবোর্ডও উচ্ছেদ শুরু হবে। অতিরিক্ত সাইনবোর্ড লাগিয়ে অনেকে ঢাকা শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করছেন, এ ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকুন। আমাদের অভিযান চলবেই চলবে। আমি আবারো বলছি আমাদের সড়ক এবং ফুটপাতে যত অবৈধ নির্মাণসামগ্রী বা অন্যকোন সামগ্রী থাকবে তা নিলাম হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, সড়ক ও ফুটপাত রাখা অবৈধ নির্মণসামগ্রী ও অন্যান্য সামগ্রী উচ্ছেদে আজ ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলে মোট ৩২টি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এসব নিলামের মাধ্যমে ১৩ লক্ষ ৮ হাজার ৫৯০ টাকা এবং জরিমানা বাবদ ৬ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা আদায় করা হয়। এছাড়া ১ হাজার ২০০টি অবৈধ স্থাপনা, টং দোকান, শেড ইত্যাদি উচ্ছেদ করা হয়।
পরিদর্শনকালে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সেলিম রেজাসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সানবিডি/আরএম/১৬.১৮/৭/৯/২০