পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত জেড ক্যাটাগরির কোম্পানি বেক্সিমকো সিনথেটিকস লিমিটেডের শেয়ার লেনদেন স্থগিত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে এটি কার্যকর হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, বিএসইসি ইতোমধ্যে এই সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দিয়েছে। ১৯৬৯ এর সেকশন ৯ এর ৭ ধারা অনুযায়ী লেনদেন স্থগিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। অন্যদিকে স্টক এক্সচেঞ্জ ১৯৬৯ এর সেকশন ৯ এর ৮ ধারা অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে ৩০ দিনের জন্য লেনদেন স্থগিত করতে পারে। পরবর্তীতে এটি ১৪ দিন করে বৃদ্ধি করতে পারে।
এদিকে একটি সূত্র জানিয়েছে কোম্পানিটি দীর্ঘদিন যাবত পুঁজিবাজারের মন্দ অবস্থানে (জেড ক্যাটাগরিতে ) রয়েছে। ফলে কোম্পানিটির উদ্যোক্তারা তালিকাচ্যুতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে কমিশনে আবেদন করে। পরে কমিশন কোম্পানির সাথে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে একাধিকবার বৈঠকে বসে। সব কিছু ঠিকঠাক করে দ্রুত সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির লেনদেন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যাতে করে কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়িয়ে বা কমিয়ে কেউ স্বার্থ হাসিল করতে না পারে। চুড়ান্তভাবে বাস্তবায়ন হলে পুঁজিবাজারের ইতিহাসে এটি হবে একটি ইতিহাস। এর আগে কোন কোম্পানি স্বেচ্ছায় তালিকাচ্যুতির আবেদন করেনি।
এদিকে নিজেদের শেয়ারহোল্ডারদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বেক্সিমকো সিনথেটিক্স জানিয়েছে, ড্রওন টেক্সচারড ইয়ার্ন (ডিটিওআই) নামে এক ধরণের পলিয়েস্টার সুতা উৎপাদন ও বিক্রির জন্য কোম্পানিটি ১৯৯০ সালের ১৮ জুলাই ‘যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর’-এ পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধিত হয়। ১৯৯৩ সালের ৪ নভেম্বর ও ৬ নভেম্বর যথাক্রমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত হয় কোম্পানিটি।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কোম্পানির কার্যক্রম ছিল একক পণ্য অর্থাৎ ডিটিওয়াই ঘিরে। তবে তখন যেহেতু ডিটিওয়াই-এর ব্যাপক চাহিদা ছিল, সেহেতু কোম্পানিটিও ভালো মুনাফা অর্জন করে এবং ১৯৯৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ১৮ বছর ধরে বিরতিহীনভাবে নিয়মিত লভ্যাংশ প্রদান করে। তবে ২০১৩ সালের পর থেকে কোম্পানি কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারেনি। তখন থেকে কোম্পানি খুবই কঠিন সময় পার করতে থাকে। ডিটিওয়াই আমদানির ওপর সরকার শুল্ক হ্রাস করায় বারবার কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হতে থাকে। শুল্ক হ্রাসের কারণে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত সস্তা ডিটিওয়াই বাজার দখল করে। ফলে বাংলাদেশে এই ধরণের সুতা উৎপাদন করে মুনাফা অর্জন অসম্ভব হয়ে পড়ে।
জানা গেছে, ১৯৯৩ সালে কোম্পানিটি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির অনুমোধিত মূলধন ৮৬ কোটি ৭১ লাখ ২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে শেয়ার রয়েছে ৩৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ১৭ দশমিক ৯৩ শতাংশ। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের নিকট রয়েছে দশমিক ০২ শতাংশ। এছাড়াও সাধারন বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ৪৬ দশমিক ৩৮ শতাংশ শেয়ার। সর্বশেষ সোমবার ডিএসইসিতে কোম্পানিটির সর্বশেষ শেয়ার দর ছিল ৮ টাকা ৪০ পয়সা।
সানবিডি/জিইউ