মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সেনাবাহিনী কর্তৃক সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হওয়ার আলামত পাওয়ার কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে মিয়ানমার।
দেশটির সেনাবাহিনী মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাখাইনের রোহিঙ্গাদের ওপর বড় পরিসরের নির্যাতনের বিষয়ে তদন্ত করছে তারা।
এর মাধ্যমে শুরু থেকে রোহিঙ্গা গণহত্যার কথা অস্বীকার করে আসলেও এই প্রথম রোহিঙ্গাদের ওপর ব্যাপকাকারে নির্যাতনের কথা স্বীকার করলো মিয়ানমার।
সরকারের প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২০১৬-১৭ সালের এ সময়টিতে নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। মংডু এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়টি এ তদন্তে যুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে মিয়ানমার সরকারের একটি তদন্ত কমিশন এক প্রতিবেদনে দেশটির কিছু সেনাসদস্যকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করে।
গত সপ্তাহে মিয়ানমারের দুই সেনাসদস্যকে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে হাজির করা হয়। গত জুলাই মাসে এ দুই সেনা এক ভিডিওতে রাখাইনে সেনাবাহিনীর অভিযানের সময় গ্রামবাসীকে হত্যার সাথে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন।
মিয়ানমারে রাখাইনে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালে প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। নির্যাতনের সেই ঘটনাকে রোহিঙ্গাদের উপর ‘গণহত্যা’ বলে জাতিসংঘ মন্তব্য করলেও, অভিযোগ অস্বীকার করে দেশটির সেনবাহিনী।
রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠীর তৎপরতা ঠেকাতে এমন অভিযান চালিয়েছে বলে এতদিন দাবি করে তারা।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।
হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় ১০ লাখ মানুষ।
সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা ও ডয়চে ভেলে