ভারতের নিয়ন্ত্রণে থাকা জম্ম ও কাশ্মীরের জন্য ১৩৫০ কোটির প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ভারত। এর আওতায় আগামী এক বছরের জন্য পানি ও বিদ্যুৎ বিলের ৫০ শতাংশ ছাড়া পাবেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আর ব্যবসার জন্য যারা ব্যাংক ঋণ নিয়েছেন, আগামী ৬ মাসের জন্য তাদের প্রত্যেককে সুদের ওপর ৫ শতাংশ করে ছাড় দেওয়া হবে। খবর আনন্দবাজারের।
শনিবার ভারত শাসিত জম্মু-কাশ্মীরের জন্য অতিরিক্ত ১৩৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজের ঘোষণা করেন সেখানকার লেফটেন্যান্ট গভর্নর (উপ রাজ্যপাল) মনোজ সিনহা। তাতেই উপত্যকার সাধারণ মানুষ, ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ী এবং পর্যটন শিল্পের জন্য একাধিক পদক্ষেপের ঘোষণা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে মনোজ সিনহা বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীরের জন্য ১৩৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজে অনুমোদন দিয়েছি আমরা। উপত্যকার ব্যবসায়ী সম্প্রদায় কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। তাদের জন্য এই ঘোষণা করতে পেরে খুশি আমি। এর আওতায় আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্প এবং স্থানীয় প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপের বাইরেও অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা পাবেন তারা।’
২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ঋণগ্রহীতাদের কোনও স্ট্যাম্প ডিউটিও দিতে হবে না বলে জানান তিনি।
সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনোজ সিনহা বলেন, ‘চলতি অর্থবর্ষে বিনা শর্তে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ঋণগ্রহীতাদের সুদের ওপর ৫ শতাংশ ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। আগামী ছ’মাস তাঁরা এই সুবিধা পাবেন। এতে তাদের ভার খানিকটা হলেও লাঘব হবে এবং রোজগারের সুযোগ বাড়বে বলে ধারণা আমাদের।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী এক বছরের জন্য জল ও বিদ্যুতের বিলের উপর ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। একই সঙ্গে ২০২১-এর মার্চ পর্যন্ত স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হবে না ঋণগ্রহীতাদের।’
এসময় মনোজ সিনহা বলেন, ‘‘তাঁত ও হস্তশিল্পের মানুষের জন্য ১ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ক্রেডিট কার্ডে সর্বোচ্চ খরচের সীমা ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। সুদের উপর ৭ শতাশ ছাড় পাবেন তাঁরা। ১ অক্টোবর থেকে মহিলা ও অল্পবয়সি ব্যবসায়ীদের জন্য উপত্যকার ব্যাঙ্কগুলিতে বিশেষ ডেস্ক চালু করা হবে।’’ প্রয়োজনে সেখানে তাঁদের কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানান তিনি।
এই প্যাকেজ ঘোষণার সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নন স্থানীয়রা
তবে সরকারের এই ঘোষণায় তারা সন্তুষ্ট নন জম্মু-কাশ্মীরের অধীবাসীরা। তাদের যে ক্ষতি হয়েছে এর তুলনায় এ প্যাকেজ খুবই নগন্য।
জম্মু-কাশ্মীর আপনি পার্টির প্রেসিডেন্ট আলতাফ বুখারি বলেন, ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার এবং করোনার ধাক্কা, দুইয়ে মিলিয়ে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, সরকারের এই প্যাকেজ তার সামনে কিছুই নয়।
আলতাফ বুখারি বলেন, ‘সব মিলিয়ে ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে আমাদের। তার সামনে ১৩৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ সমুদ্রে এক ফোঁটা জলের চেয়ে বেশি নয়।’