দীর্ঘদিন পতনের মুখে থাকা পুঁজিবাজার স্থিতিশীল রাখতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে নিরন্তর কাজ করছেন অধ্যাপক ড. শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তারই ধারাবাহিকতায় সিকিউরিটিজ আইন অমান্য করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠিন অবস্থানে কমিশন।
বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন,পুঁজিবাজার হলো দেশের শিল্পায়নের জন্য। একটি দেশের পুঁজিবাজার শক্তিশালী হলো সে দেশের অর্থনীতির ভিত্তিও মজবুত হয়। পুঁজিবাজার থেকে সহযে টাকা নিয়ে দেশের শিল্পায়ন করা যায়। দেশের শিল্পায়ন বাড়লে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পায়। কর্মসংস্থান বাড়লে কমে বেকারত্ব। এভাবেই এগিয়ে যায় দেশের অর্থনীতি। বিশ্বের অন্যদেশে পুঁজিবাজার যেভাবে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশে তেমন হয়নি।
তাদের মতে, নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে কাজ করছে। কমিশন কঠোর অবস্থানে আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে। ফলে আস্থা বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। বাজারে ফিরছে সাইডলাইনে থাকা বিনিয়োগকারীরা। চাঙ্গা হয়ে উঠছে পুঁজিবাজার।
কমিশন সূত্র মতে, বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে ইতোমধ্যে ৯টি কোম্পানির ১৭ পরিচালকের পদ শূণ্য ঘোষণা করে আদেশ জারি করা হয়েছে। আদেশের কপি ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে পাঠানো হয়েছে। চিঠি হাতে পাওয়ার সাথে সাথেই এটি কার্যকর হবে।
বিএসইসি সূত্র জানায়, পরিচালক পদে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এককভাবে কমপক্ষে ২ শতাংশ এবং উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকার যে শর্ত রয়েছে গত আট বছরে অনেক পরিচালক ও কোম্পানিই এ শর্ত মানেনি। কিন্তু এখন কোনো ছাড় দেবে না কমিশন।
এর আগে আরও অনেকগুলো কোম্পানি,ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। শেয়ার নিয়ে কারসাজি করে যে টাকা আয় করেছে তার সম পরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি জরিমানা করছে কমিশন। ফলে আগামীতে এই শেয়ার নিয়ে কারসাজি কমবে বলেও মনে করেন বাজার সংশ্লিষ্ঠরা।
বিএসইসির একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমান কমিশন ব্যক্তির স্বার্থ প্রাধান্য না দিয়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থ চিন্তা করছে। এরজন্য আইন অনুসরণ করে যেসব পদক্ষেপ নেয়া যায় তার সবই করার চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে এএফসি ক্যাপিটালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব এইচ মজুমদার সানবিডিকে বলেন,একটি স্বচ্ছ জবাবদিহীমুলক পুঁজিবাজার তৈরি করার জন্য কাজ করছে কমিশন। স্বল্প সময়ে কমিশন অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা পুঁজিবাজারের বিকাশে আরও সহজ করবে।
এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবায়দুর রহমান সানবিডিকে বলেন,পুঁজিবাজারের উন্নয়নে নতুন কমিশন যুগান্তকারী কিছু পদক্ষেপগুলো নিয়েছে। ফলে নতুনভাবে প্রাণ ফিরে এসেছে পুঁজিবাজারে।
বিষয়টি নিয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম সানবিডিকে বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আমরা নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছি। আমরা চাই একটি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক পুঁজিবাজার। এর জন্য যা করা প্রয়োজন তা করতে আমরা প্রস্তুত। সবার সহযোগিতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি সুন্দর ও স্বচ্ছ বাজার গড়ে উঠবে বলে আমি বিশ্বাস করি।