বাজেট ২০২৪-২৫

এমপিদের গাড়ি আমদানিতে বসছে না শুল্ক

আপডেট: ২০২৪-০৬-০৬ ১৪:৩৫:২০


আইনি বাধার কারণে আগামী বাজেটে শুল্ক বসছে না সংসদ সদস্যদের আমদানি করা গাড়িতে। অপরদিকে এমপিদের গাড়িতে শুল্ক বসানোর নীতিমালাও করতে হবে তাদেরই হ্যাঁ না ভোটের ভিত্তিতে। তাই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া এ নীতিমালা বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

একজন সংসদ সদস্য তার এক মেয়াদে একটি গাড়ি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পান। সেই সুযোগটিও সংকুচিত করতে চায় এনবিআর। কারণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রান্তিক করজাল বাড়ানো, নিত্যপণ্যে ভ্যাট আর আমদানিতে শুল্ক আরোপের পরেও বিদায়ী অর্থবছরে এনবিআরের ঘাটতি ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি। আইএমএফের দফায় দফায় সফরেও হয়নি শর্ত পূরণ। এ অবস্থায় আরও শক্ত হতে চায় রাজস্ব বোর্ড।

সংসদ সদস্যদের গাড়িতে শুল্ক বসতে যাচ্ছে, আগামী বাজেট সামনে রেখে উঠে আসে এমন আলোচনা। এনবিআর বলছে, ২৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি আর ১৫ শতাংশ ভ্যাট বসানোর একটি প্রস্তাবনা রাখা হয়েছিল। সম্মতি ছিল প্রধানমন্ত্রীরও। তবে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হচ্ছে বাজেটের আগমুহূর্তে।

কাস্টমস আইনে সংসদ সদস্যরা সাড়ে ১৬০০ থেকে সাড়ে ৪ হাজার সিসি পর্যন্ত একটি ব্যক্তিগত প্রাইভেট কার বা জিপ আমদানি করতে পারেন। তবে লেক্সাস, মার্সিডিজ, হামার, বিএমডব্লিউ, রোলস রয়েস, ফেরারি, অডির মতো বিলাসবহুল গাড়ি আমদানিতে সুবিধা পান না তারা। নীতিমালা অনুযায়ী সাধারণত টয়োটা ব্র্যান্ডের গাড়ি আমদানি করেন সংসদ সদস্যরা। এক্ষেত্রে শুল্ক বসলে ৪ হাজার সিসির একটি গাড়িতে সংসদ সদস্যদের দিতে হবে ২৫ লাখ টাকা। যা সাধারণ গ্রাহকদের দিতে হয় ৬ কোটি টাকারও বেশি।

তবে এনবিআর চাইলেও আপাতত বাস্তবায়ন সম্ভব হচ্ছে না এমপিদের গাড়িতে শুল্ক বসানোর নীতিমালা। কারণ ১৯৭৩ সালে রাষ্ট্রপতির এক আদেশের বলেই এই সুবিধা ভোগ করছেন তারা। আর সে আইন আগে বাতিল না করলে কাস্টমস নীতিমালা করাও সম্ভব নয় বলে মত রাজস্ব বিশ্লেষকদের।

এসএমএসি আইটি লিমিটেডের পরিচালক স্নেহাশিস বড়ুয়া বলেন, ‘যেহেতু এটা প্রেসিডেন্সিয়াল অর্ডার দিয়ে হয়েছে, সেহেতু এটা একটা আইন। এ বিধানটা আগে বাতিল করতে হবে। এটা বাতিল না করে কাস্টমস আইন দিয়ে ট্যাক্স করলে এটা সাংঘর্ষিক হবে।’

তবে ১৯৭৩ সালের আদেশ বাতিল করে তার বিপরীতে কাস্টমসের নতুন নীতিমালাও সংসদে হ্যাঁ না ভোটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। আর উচ্চ পর্যায়ে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত না হলে নিজেদের গাড়ি আমদানিতেই হ্যাঁ ভোট কেন দেবেন সংসদ সদস্যরা, সে প্রশ্ন সংশ্লিষ্টদের।

সাবেক এনবিআর সদস্য মো. আব্দুল কাফী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের সংখ্যা এতো বেশি যে, এখানে সরকার সিদ্ধান্ত নিলে এনবিআরের জন্য এটা বাস্তবায়ন কঠিন কিছু না। এর জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রথম প্রয়োজন। মূল ক্ষমতার জায়গা হচ্ছে আইন। সে আইনটাকে সংশোধন আনতে হবে। আনার পর এসআরও করতে হবে।’

আগামী বাজেটে বেশ কিছু খাত থেকে প্রণোদনা কমাতে পারে এনবিআর। বেশকিছু উৎপাদন খাতে কর ও আমদানি শুল্ক বসানোর পরিকল্পনা এনবিআরের।

এএ