হত্যাকারীদের শাস্তি পেতেই হবে: জামায়াত আমির
আপডেট: ২০২৪-১০-১৫ ১৬:৩৯:০৬
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ক্ষমতায় থাকার জন্য মানুষ হত্যাকারীদের কোনোভাবে ক্ষমা করা হবে না, তাদেরকে শাস্তি পেতেই হবে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আব্দুল কুদ্দুস মাখন মুক্তমঞ্চ ময়দানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা নিজের হাতে আইন তুলে নেবো না। কিন্তু আমাদের দেশপ্রেমিক নাগরিক আলেম-ওলামা যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, এ হত্যাকারীদের আমরা বিচার চাই। মক্কা বিজয়ের দিনে নবী করিম (সা.) দীনের বিরোধিতাকারীদের ক্ষমা করেছিলেন। কিন্তু যারা মানুষ হত্যা করেছিল, তাদেরকে আল্লাহর রাসুল ক্ষমা করেন নাই। ১০ জনের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় হচ্ছে একমাত্র মৃত্যুদণ্ড। সুতরাং এদেরকে যেখানেই পাওয়া যাবে সেখানে হত্যা করতে হবে।
জামায়াত আমির বলেন, যারা হত্যাকারী তাদেরকে শাস্তি পেতেই হবে। সাড়ে ১৫ বছর বিভিন্ন পর্যায়ে যাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্টে যে গণহত্যা চালানো হয়েছে, এসবের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় অবশ্যই আনতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণের হাজার ও লক্ষ-কোটি টাকা ফ্যাসিস্ট দল এবং তাদের দোসররা মিলে লুটপাট করেছে। সেই টাকা বাংলাদেশের রাখার সৎ সাহস নেই বলে তারা বিদেশের মাটিতে পাচার করেছে। সাহেবরা বাংলাদেশে আর তাদের পরিবার বেগম পাড়ায় থাকতো, এরা নাকি দেশপ্রেমিক!
তিনি শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও শেখ রেহানার ছেলের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, নিজের ছেলের জন্য বাংলাদেশে একটি মেয়েও খুঁজে পাননি, তারা আবার চেতনার দোহাই দেন। নিজেদের মেয়ের জন্যও বাংলাদেশের ছেলে তাদের পছন্দ হয় না। তাদের ওই চেতনা বাংলাদেশের মানুষ পছন্দ করেননি। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর জাতির ওপর দিয়ে তারা তাণ্ডব চালিয়েছে। জাতির এমন কোনো মানুষ নেই, তারা কয়জন ছাড়া, যারা নির্যাতিত নিষ্পেশিত হননি।
ক্ষমতায় যেতে পারলে দেশের মানুষের জন্য কাজ করবেন, এমন আশ্বাস দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের ১০ দফার কথা বলা হয়েছে। না আমাদের দফা ৪১। সমস্ত শ্রেণি-পেশা ও লিঙ্গবর্ণ এবং ধর্ম সবার অধিকারের প্রতি সম্মান রেখে আমাদের ৪১ দফার রচিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আমরা ১০ দফা এনেছি অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য। আমরা সব দফা যদি তাদের ঘাড়ে উঠিয়ে দিই তাহলে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার তারাই এসে কী করবে। আমরা বেশ কিছু দফা নির্বাচিত সরকারের জন্য রাখতে চাই।
তিনি বলেন, আল্লাহর ইচ্ছা সে সরকারটা যদি আমরা হই অথবা অন্য কেউ হয়, যেই হোক আমরা তাদেরকে পরীক্ষা করে দেখতে চাই।
শফিকুর রহমান বলেন, আমরা অন্য দলের কথা বলতে পারব না। আমাদের পক্ষ থেকে কথা দিচ্ছি, এই জাতিকে সাক্ষী রেখে গণমাধ্যমের সামনে, যদি আমাদের ওপর জাতি তাদের আমানত রাখে, এটা আল্লাহর সিদ্ধান্ত আর জনগণের সমর্থন যদি রাখে, আমরা ইনশাল্লাহ নিজেদের ওয়াদা রক্ষার সর্বাত্মক চেষ্টা করব।
জামায়াতের আমির আরও বলেন, আমরা এমন একটা দেশ চাই অন্য কোন দেশের শক্তি কিংবা অধীনতা মেনে নেবো না। পৃথিবীর অন্য দশটি দেশ যেমন মাথা উঁচু করে বিশ্বের বুকে দাঁড়ায়, বাংলাদেশও ইনশাআল্লাহ তার শির উঁচু করে দাঁড়াবে। বিদেশে আমাদের বন্ধু থাকবে, কিন্তু আমরা কোনো প্রভু মেনে নেব না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা জামায়াতের আমির মোহাম্মদ গোলাম ফারুকের সভাপতিত্বে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জামায়েত ইসলামের কুমিল্লা মহানগরীর আমির কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, কুমিল্লা নোয়াখালী অঞ্চলের টিম সদস্য মোহাম্মদ আব্দুস সাত্তার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাবেক আমির গোলাম সারোয়ার, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্যসহ জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।
বিএইচ