অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে সংশোধনী আনলো ভারত

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৯-২৩ ০৯:৪১:১০


নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, তেলবীজ, ভোজ্য তেলের মতো কৃষিপণ্যকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের ক্যাটাগরি থেকে বাদ দিয়ে সংসদে বিল পাস করেছে ভারত। রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের মাধ্যমে এই বিল আইনে পরিণত হলে এসব পণ্যের ওপর আর সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। পাশাপাশি মজুদের ঊর্ধ্বসীমাও।

ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার দাবি করছে, সরকারি নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়ার ফলে কৃষকদের তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিশ্চিত হবে এবং কৃষিতে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আসবে।

কৃষি বিল নিয়ে রাজ্যসভার ভেতরে বাইরে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রতিবাদের মধ্যেই অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সংক্রান্ত বিল পাস করলো নরেন্দ্র মোদি সরকার। মঙ্গলবার এই বিল পাসের মাধ্যমে সাড়ে ছয় দশকের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে‌ সংশোধনী আনলো ভারত।

১৯৫৫ সালে প্রণীত অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন সংশোধনের কথা উঠেছে মূলত করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ প্রকল্পের ঘোষণার মধ্য দিয়েই। গত ৫ জুন এই সংক্রান্ত অধ্যাদেশ জারি করে কেন্দ্র সরকার।

নতুন এই আইন অনুযায়ী, শুধু অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে সরকার এসব পণ্যের মজুদ, বিক্রি বা অন্যান্য বিষয়ের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারবে। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হিসেবে অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি, যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, ভয়াবহ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মতো বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে সংশোধনীতে।

বিলের ব্যাখ্যায় কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষা, খাদ্য ও গণবণ্টন দফতরের প্রতিমন্ত্রী দানভে রাওসাহেব দাদারাও রাজ্যসভায় বলেন, সংশোধিত আইনটি কার্যকর হলে চাষিরা ফসল উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, বণ্টন ও বিক্রির স্বাধীনতা পাবেন। পাশাপাশি কৃষিক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের সম্ভাবনার দরজা খুলে যাবে। সংশোধনীতে মজুদের ঊর্ধ্বসীমা তুলে নেয়ার ফলে ফসল উৎপাদনের পর যত সম্ভব মজুদ করা যাবে। চাষিদের ফসল নষ্ট বা কম দামে বিক্রির সম্ভাবনা কমবে। এই সংশোধনীতে কৃষক ও উপভোক্তা, দু’পক্ষই লাভবান হবে।

খরা, ঋণ ও ফসলের দাম না পাওয়াসহ নানা কারণে যেখানে ভারতে প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কৃষক আত্মহত্যা করেন সেই পরিস্থিতির মধ্যে আইন সংশোধনীর পক্ষে যুক্তি হিসেবে সরকার বলছে, ১৯৫৫ সালে আইন প্রণয়নের সময় দেশে খাদ্যসঙ্কট ছিল। খাদ্য আমদানি করতে হতো। এখন খাদ্যশস্য রফতানি করে ভারত। প্রতি বছর খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকে। কোনো মৌসুমে উৎপাদন বেশি হলে চাষিরা দাম পান না, ক্ষতিগ্রস্ত হন। এসব কারণেই অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইনে সংশোধনী আনা জরুরি হয়ে পড়েছিল।

সূত্র: এনডিটিভি