সাইবার নিরাপত্তাহীনতায় ব্যাংক খাত  

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৯-২৭ ২১:৪৮:৫৫


দেশের বেশিরভাগ ‍বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে অনলাইন লেনদেনের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা অবকাঠামোর অভাব রয়েছে। ফলে ‘বিগল বয়েজ’-এর মতো বিভিন্ন ডিজিটাল প্রতারকের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে আর্থিক লেনদেন।

ব্যাংকগুলোর এ ধরণের ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রয়োজন সুপ্রতিষ্ঠিত ডিজিটাল আইন। তা না হলে আমাদের জন্য সামনে ভয়াবহ ডিজিটাল দুর্যোগ অপেক্ষা করছে। এমন মন্তব্য করেছেন দেশের বেসরকারি ইনফরমেশন সিকিউরিটি কোম্পানি- ব্যাকডোর প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর হোসেন জোহা।

আজ রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামে (ইআরএফ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

এ বিষয়ে তানভীর হোসেন জোহা বলেন, প্রযুক্তিগত সমস্যা প্রযুক্তি দিয়েই সমাধান করতে হবে। এটা চিরতরে নির্মূল করা অসম্ভব। তবে সিকিউরিটি বাড়িয়ে প্রযুক্তিগত সমস্যাগুলো প্রতিরোধ করা যায়। এজন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশের বেশিরভাগ ব্যাংকেই সাইবার নিরাপত্তা বিষয়টি উপেক্ষিত। কেননা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নিরাপদ নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে উদাসীন। অধিকাংশ ব্যাংকে অনলাইন লেনদেনের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা অবকাঠামোর অভাব রয়েছে।

‘হ্যাকিংয়ের নিত্যনতুন কৌশল সম্পর্কে ব্যাংকগুলোর সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ আপডেট থাকে না। এছাড়া নেটওয়ার্কে দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করার জন্য নিয়মিত পরিকল্পনামাফিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয় না। কয়েকটা ব্যাংক ছাড়া ব্যাংকগুলো সার্বক্ষণিক, বিশেষ করে রাতের বেলা মনিটরিং করা হয় না। ফলে সাইবার আক্রমণের চেষ্টা হলেও জানতে পারা যায় না এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয় ব্যাংক।’

এসব সমস্যার সমাধানে ব্যাংকগুলোর নেটওয়ার্ক দুর্বলতা চিহ্নিত করে সার্বক্ষণিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন তানভির জোহা। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে সিকিউরিটি অপারেশন সেন্টার (এসওসি)। নেটওয়ার্কের যে কোনো ধরনের হ্যাকিং বা লেনদেন সম্পর্কিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সম্পর্কে আগাম পূর্বাভাস দিতে সক্ষম এসওসি।

উল্লেখ্য, বিগত ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে হ্যাকিং-এর পর নেটওয়ার্ক সুরক্ষার জন্য দক্ষ জনবল ও অবকাঠামো তৈরির জন্য সরকার একাধিকবার ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়। এসব নির্দেশনা প্রতিপালন না করায় সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক একাধিক সার্কুলার জারি করে বিষয়টি সকল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের মনে করিয়ে দেয়।

এমন পরিস্থিতে এটিএম বুথ থেকে টাকা চুরির ঘটনাও ঘটে। পূর্বেও হ্যাকিং-এর মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তাভাবনা ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।

সানবিডি/এনজে/৯:৪৮/২৭.০৯.২০২০