সেনাবাহিনীকে মজবুত করতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘আরও অ্যাসল্ট’ রাইফেল আনছে ভারত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৯-২৯ ১০:৪৮:৪১
টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের সঙ্গে সংঘাতের আবহের মধ্যেই সেনাবাহিনীকে মজবুত করতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও অ্যাসল্ট রাইফেল আনছে ভারত। সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) অতিরিক্ত ৭২ হাজার অ্যাসল্ট রাইফেল-সহ আরও বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র কেনার অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এসব অস্ত্র কিনতে ভারতের খরচ হবে মোট ২ হাজার ২৯০ কোটি টাকা। এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য রাইফেল আনানো হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডারে অ্যাসল্ট রাইফেলের ঘাটতি মেটাতে ফাস্ট-ট্র্যাক ক্রয় চুক্তির আওতায় প্রথম দফায় ৭২ হাজার ৪শ সিগ সয়ার রাইফেল কিনেছিল ভারত।
দ্বিতীয় দফায় সেনাবাহিনী আরও ৭২ হাজার অ্যাসল্ট রাইফেল পাচ্ছে। পূর্ব লাদাখে চীনের সেনাবাহিনীর সঙ্গে চরম সংঘাতের প্রেক্ষিতেই এসব অস্ত্র আরও দ্রুত কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
শুধু রাইফেল নয়, আরও সামরিক সরঞ্জাম কেনার ছাড়পত্রও দেওয়া হয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশ থেকে ৭৮০ কোটি টাকার অ্যাসল্ট রাইফেলসহ সবমিলিয়ে প্রায় ২ হাজার ২৯০ কোটি টাকার সামরিক অস্ত্রশস্ত্র ও সরঞ্জাম কেনার প্রস্তাবে সোমবার অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
গতকাল ডিফেন্স অ্য়াকোয়াজিশন কাউন্সিলের (ডিএসি) বৈঠক ছিল। সেখানেই অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধ সরঞ্জাম কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, অ্যাসল্ট রাইফেল ছাড়াও অ্যান্টি-এয়ারফিল্ড অস্ত্র কেনা হচ্ছে ৯৭০ কোটি টাকা দিয়ে। এই অস্ত্র দেশের নৌ ও বিমান বাহিনীকে শক্তশালী করবে। এছাড়া অত্যাধুনিক রেডিও সেট কেনা হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রে নিরাপদ ভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা তৈরি করতে। এজন্য খরচ হবে আরও ৫৪০ কোটি টাকা।
ভারতীয় সেনাবাহিনী ইনসাস রাইফেলকে ধীরে ধীরে বাতিল করে অত্যাধুনিক সিগ সয়ার রাইফেল ব্যবহার করার দিকে ঝুঁকেছে। নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য আট লাখ অ্যাসল্ট রাইফেলের প্রয়োজন। ধাপে ধাপে তা কেনা হবে।
আমেরিকার দ্য স্মল আর্মস ম্যানুফ্যাকচারার সিগ সর এই রাইফেল তৈরি করবে। ৭ দশমিক ৬২ এমএম অ্যাসল্ট রাইফেলের নাম সিগ ৭১৬, যা ফ্রন্টলাইন সেনা জওয়ানদের জন্যই মূলত ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক একটি রাইফেলের দাম ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮২ হাজার টাকা।
১৬ ইঞ্চির ব্যারেলের এম-এলওএম হ্যান্ডগার্ড রাইফেলে রয়েছে ৬ পজিশন টেলিস্কোপিক স্টক, যার সাহায্যে শত্রুপক্ষকে আঘাত করা যাবে যে কোনও দিক থেকেই। এটি একটি সেমি অটোমেটিক মাল্টি-ক্যালিবার রাইফেল।
ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরিও ঘাতক নামে একই ধরনের রাইফেল তৈরি করেছে। কিন্তু ওই কারখানার কর্মকর্তাদের আক্ষেপ সেই রাইফেলের কদর করছে না ভারত।
ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরির একটি সূত্র বলছে, ২০১৭ সাল পর্যন্ত সেনাবাহিনীর ‘প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট টিম’ কারখানায় এসেছিল। কিন্তু তার পরে আর আসেনি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অন্য একটি সূত্রে দাবি, একই ধরনের রাইফেল হলেও বিদেশি রাইফেল অনেক বেশি উপযোগী। তাই সব দিক খতিয়ে দেখেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাইফেল কেনা হয়েছে।
এ বিষয়ে উত্তরপ্রদেশের আমেঠির করওয়ার অস্ত্র কারখানায় রাশিয়ার সঙ্গে যৌথ ভাবে একে ২০৩ রাইফেল তৈরি করার কথা ভারতের। মেক ইন ইন্ডিয়া প্রজেক্টে মোট ৬.৭১ লাখ একে-২০৩ রাইফেল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। তবে নানা কারণে ওই প্রকল্পের কাজ শুরু হতে দেরি হচ্ছে। এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে থেকে অ্যাসল্ট রাইফেল কিনে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।
সানবিডি/নাজমুল/১০:৪৮/২৯.০৯.২০২০