পাঁচ মোবাইল কোম্পানির অবৈধ কার্যক্রমের খোঁজে তদন্ত কমিটি মাঠে
আপডেট: ২০১৫-০৯-২১ ১৬:১০:০২
অবৈধ টেলিযোগাযোগ কার্যক্রম রোধে গঠিত তদন্ত কমিটি ৫টি দলে ভাগ হয়ে কাজ শুরু করেছে। কমিটি দেশের ৫টি মোবাইলফোন অপারেটরের অবৈধ কার্যক্রমের উৎস, কৌশলসহ বিভিন্ন অনিয়ম তদন্ত শেষে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা আকারে প্রতিবেদন তৈরি করে, তা ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দেবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থায় (বিটিআরসি)। যেসব অপারেটরের অনিয়ম অনুসন্ধান করা হবে সেগুলো হলো, গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক, এয়ারটেল ও টেলিটক। তবে, এই কার্যক্রমের বাইরে রাখা হয়েছে সিটিসেলকে। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি) গঠিত এ সব কমিটিতে রয়েছেন বিটিআরসি, মোবাইলফোন অপারেটর, আইএসপি, আইজিডব্লিউ, আইআইজি, বেসরকারি পিএসটিএন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি প্রথম পর্যায়ে ৫ মোবাইল অপারেটরে ২ দিন করে, পরবর্তী পর্যায়ে বিটিসিএল ও র্যাংকসটেল পরিদর্শন করবে। এরপরে দল পুনর্বিন্যাস করে ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল ক্যাবল (আইটিসি), বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানি লিমিটেড, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) ও ইন্টারকানেক এক্সচেঞ্জে (আইসিএক্স) সিডিউল করে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এরই মধ্যে এসব কমিটি মোবাইল অপারেটরগুলো পরিদর্শন করেছে। প্রতিনিধি দল গ্রামীণফোন, রবি, বাংলালিংক ও এয়ারটেলের কার্যক্রমে ‘অস্বাভাবিকতা’ অতিমাত্রায় না পেলেও পেয়েছে টেলিটকে। দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অবৈধ ভিওআইপি হয় ‘এমন’ প্রায় ৫ লাখ টেলিটক সিম চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গ্রুপ বা দল যেসব তথ্য পেয়েছে, তাতে দেখা গেছে, টেলিটকের ৯০ শতাংশ রাজস্ব আসে অবৈধ ভিওআইপি কল থেকে। তিনি বলেন, আমরা টেলিটকের প্রায় ২৫ হাজার সিম বন্ধের পরামর্শ দিয়ে এসেছি।এ সংখ্যা আরও বাড়বে।
এই প্রতিনিধি আরও জানান, অপারেটরগুলোর মধ্যে কারও এক হাজার, কারও ৫০০ সিম বন্ধের সুপারিশ করা হলেও টেলিটকের বেলায় তা ‘অসীমিত’। দলগুলো প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দেওয়ার পরে দেশে অবৈধ ভিওআইপির প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে।
পরিদর্শন দল অপারেটরগুলোয় সেলফ-রেগুলেটরি লজিক প্রয়োগ করেছে। এ ছাড়া হাই ভলিউম ইউজ এবং সিগন্যালিং ট্র্যাক থেকে ডোমেস্টিক কলের প্রাপ্তি স্বীকার পর্যবেক্ষণ, রং সিএলআই বা প্রিফিক্স পর্যবেক্ষণ, অফনেট ও অন-নেট কল বিশ্লেষণ, বিটিএস (মোবাইল টাওয়ার)-এর উচ্চ ব্যবহার, স্যাম্পল কল টেস্ট পরিচালনা, ব্যান্ডউইথের উৎস বিশ্লেষণ, বাল্ক কল ও শর্টকোডের সৃষ্ট এসএমএস’র নিউমেরিক বা অ্যালফাবেটিক পরিচয় এবং সুইচের ট্রাঙ্ক গ্রুপভিত্তিক পর্যবেক্ষণও (চেকলিস্ট অনুসারে) করে।
অবৈধ টেলিযোগাযোগ কার্যক্রম রোধকল্পে গঠিত কমিটি পর্যায়ক্রমে ৫ অপারেটরে অনুসন্ধান চালালেও এ তালিকায় নেই সিটিসেলের নাম। ৫ অপারেটরে পরিদর্শন কার্যক্রম শেষ হলে দ্বিতীয় এমনকি তৃতীয় ধাপেও সিটিসেলের নাম নেই।
কমিটির একটি সভায় আইজিডাব্লিউদের আন্তর্জাতিক ইনকামিং কল দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারদের এনলিশমেন্ট করার ব্যবস্থার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে অসম প্রতিযোগিতা বন্ধ এবং সরকার নির্ধারিত কলরেট ছাড়া কোনও ক্যারিয়ার যেন কল দিতে না পারে, সে ব্যাপারটি নিশ্চিত হবে। মোবাইল অপারেটরদের অ্যাভারেজ কল ডিউরেশন ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ ফলপ্রসূ হবে বলে সভায় মত দেওয়া হয়।