অর্ধেকও বিতরণ হয়নি প্রণোদনার কৃষি ঋণ

:: আপডেট: ২০২০-১২-১৬ ১১:০৭:৫২


করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি চাঙা করতে সরকার কৃষকদের ৪ শতাংশ সুদে ঋণ বিতরণের উদ্যোগ নিলেও এখন পর্যন্ত বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেকও বিতরণ করা যায়নি। গত অক্টোবরের ২০ তারিখ পর্যন্ত এই ঋণ বিতরণের হার ছিলো মাত্র ৪৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। টাকার অঙ্কে যা দুই হাজার ৮৯ কোটি। সরকারি-বেসরকারি খাতের ৪৩টি ব্যাংকের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৮৪ হাজার ৯৪১ জন কৃষক এই ঋণ পেয়েছেন। তবে ঋণ বিতরণের সময় রয়েছে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ‘কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কিম’ নামের বিশেষ এই তহবিলের মেয়াদ ১৮ মাস (৬ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ)।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, কৃষি খাতের জন্য সরকার ঘোষিত ৫ হাজার কোটি টাকার এই প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের সময়সীমা ছিলো ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ওই সময়ের মধ্যে ঋণ বিতরণ কাঙ্ক্ষিত না হওয়ায় সময় বৃদ্ধি করা হয় ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। গত ২০ সে‌প্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করা হয়।

ওই সার্কুলারে বলা হয়, কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কিমটি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণের সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হলো।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২০ অক্টোবর পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ঋণ বিতরণ করেছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক। এই ব্যাংকটি ঋণ বিতরণের লক্ষ্য ঠিক করেছিলো এক হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। বিতরণ করেছে এক হাজার ৫৭ কোটি টাকা বা ৮৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। ঋণ বিতরণের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক। এই ব্যাংকটির লক্ষ্য ছিলো ৩১৯ কোটি টাকা বিতরণের। আলোচ্য সময় পর্যন্ত বিতরণ করেছে ৩২৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ বরাদ্দের চেয়েও বেশি ঋণ বিতরণ করেছে ব্যাংকটি।

ঋণ বিতরণে ধীর গতির কারণ হিসেবে ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রয়োজনীয় নথিপত্রের ঘাটতির কারণে কৃষকেরা ঋণ পাচ্ছেন না। আবার বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো শহরে কৃষক খুঁজে পাচ্ছে না। কারণ, গ্রামে তাদের শাখার পরিমাণ তুলনামূলক কম। ফলে ঋণ বিতরণে বিলম্ব হচ্ছে।

বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম এর আগে বলেন, কৃষি খাতের উন্নয়নে কম সুদে প্রণোদনার ঋণ পৌঁছে দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। তাই ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্য বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রণোদনার কৃষি ঋণ বিতরণ শেষ হবে।

উল্লেখ্য, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে গত ১২ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষি খাতের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠনের ঘোষণা দেন। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক তহবিলটি গঠন করে। পরে এ তহবিলসহ সব কৃষিঋণে কৃষকদের জন্য সুদহার ৯ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। বাকি ৫ শতাংশ সুদ সরকার ভর্তুকি হিসেবে দিচ্ছে।