খালেদা পাকিস্তানে ফিরে যা: জয়

আপডেট: ২০১৫-১২-২৬ ১২:৫৩:৩৯


Joyএকাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে নিহতদের সংখ্যা নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সম্প্রতি যে মন্তব্য করেছেন তার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। খালেদা জিয়া ‘৩০ লক্ষ শহীদের কবরে এবং দেশের মুখে থুতু ফেলছে’ মন্তব্য করে তার বাড়ির সামনে গিয়ে প্রতিবাদ জানানোরও আহ্বান জানিয়েছেন জয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইন ইংরেজি ও বাংলায় দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি এ আহ্বান জানান। জয়ের স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘আমি ক্ষুব্ধ যে বিজয়ের মাসে খালেদা জিয়া এবং তার দল বিএনপি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। খালেদা নৃশংস পাক আর্মি ও তাদের সহযোগী খুনি জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক আমাদের নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যাকে পাকিস্তানিদের মতোই কমিয়ে বলে আসছে।
সে দাবি করছে মাত্র কয়েক শত হাজার হত্যা হয়েছে। আজ বিএনপি এমনকি সেই মৃতের সংখ্যার উপর জনমত জরিপ করতে বলছে! স্বীকৃত সত্য সব সময়ই সত্য। সেটা কখনও জরিপ দিয়ে নির্ণীত হয় না।’
‘৩০ লক্ষ পুরুষ, নারী এবং শিশুকে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যা করা হয়েছিল। হিন্দুদের নির্যাতন ও দেখামাত্র গুলি করা হয়েছিল। সমস্ত গ্রাম উজাড় করে ফেলা হয়েছিল। এমনকি যখন তারা আত্মসমর্পণ করতে রাজি হয়েছিল তখনও তারা আমাদের সেরা বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে গিয়ে সবাইকে হত্যা করেছিল। এগুলো যুদ্ধে হতাহতের কোনো ঘটনা ছিল না। এসব ছিল গণহত্যা।’
‘খালেদা এখন আবারও এইসব খুনিদের রক্ষা করতে চেষ্টা করছে। সে নৃশংসতার শিকার মানুষগুলোর মন্ত্রী বানিয়েছে সেই খুনিদেরই। সে এখন থুতু ফেলেছে ৩০ লক্ষ শহীদের কবরে এবং থুতু ফেলেছে আমাদের দেশের মুখে। এরপর আমার আর এই মহিলার প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা অবশিষ্ট নেই। আমি ঘৃণা করি যে, সে কোন সময় আমাদের জাতির প্রধানমন্ত্রী ছিল। সে একজন পাকিস্তানি এজেন্ট। সে বারংবার আইএসআই এজেন্টদের সাথে মিলিত হয়েছে এবং নির্বাচনগুলোতে আইএসআই থেকে টাকা নিয়েছে। তার বাংলাদেশ থেকে বিদায় হওয়া এবং তার ভালোবাসার পাকিস্তানে গিয়ে থাকা উচিৎ।
‘আমি সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি খালেদার বাড়ির সামনে প্রতিবাদ জানাতে যান। বিএনপি এবং তাকে দেখান যে তার পাকি প্রভুরা এবং জামায়াতি পোষা গুণ্ডারা আমাদের ভাই এবং বোনেদের যে হত্যা করেছে সেই স্মৃতি অপপ্রচার চালিয়ে মুছে ফেলা যাবে না। আমার সাথে একত্রে দাবি জানান, খালেদা পাকিস্তানে ফিরে যা।’
উল্লেখ্য, গত ২১ ডিসেম্বর এক আলোচনা সভায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেন, ‘আজকে বলা হয়, এতো লক্ষ লোক শহীদ হয়েছেন। এটা নিয়েও অনেক বিতর্ক আছে যে, আসলে কত লক্ষ লোক মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছেন। নানা বই-কিতাবে নানারকম তথ্য আছে।’
তার ওই বক্তব্যের পর আওয়ামী মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়। বক্তব্য প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়াকে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী উকিল নোটিশ পাঠিয়ে বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বলেন এবং নড়াইলে খালেদার নামে একটি মামলাও করা হয়।
এর প্রতিক্রিয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রশ্ন তোলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ে দুই লক্ষ পঁচাত্তর হাজার শহীদ পরিবারের তালিকা আছে। তাহলে বাকি ২৭ লক্ষ কোথায় গেল?’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে সরকারি কোনো রেকর্ড নাই। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের একটি সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে শহীদের সংখ্যা ত্রিশ লক্ষ প্রমাণিত হয় না। এর সংখ্যা বেশি বা কম হতে পারে। সঠিক সংখ্যা নিরূপনে একটি গণজরিপ দরকার।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস