সমকামিতা নিয়ে বিজ্ঞান কী বলে? পর্ব ৩
আপডেট: ২০১৫-১০-০১ ১৯:৩৩:৫১
১৯৮৮ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত তে অ্যামেরিকায় প্রকাশিত একটা সমীক্ষায় প্রশ্ন করা হয়েছিল গত বছর সমলিঙ্গের যৌন সঙ্গির সাথে যৌনতার অভিজ্ঞতা হয়েছিল কিনা। এই প্রশ্নের উত্তরে দেখা যাচ্ছে পুরুষ ও নারীদের মধ্যে একই হারে সম লিঙ্গের যৌন সঙ্গি বেড়েছে সিগ্নিফিক্যান্টলি। আগ্রহ উদ্দিপক হচ্ছে একই সময় এক্সক্লুসিভ সমকামিদের সংখ্যা বা হার বাড়েনি। এই বৈপরীত্য কেনো? গবেষকেরা মত দিচ্ছেন, সমকামিতার বিষয়ে উদার মত সৃষ্টি হওয়ায় এক্সক্লুসিভ হেটারোসেক্সুয়াল বা বিপরীত লিঙ্গে আসক্তরাও সমকামিতার স্বাদ নিতে চেয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে সমাজের দৃষ্টি ভঙ্গি এই সমকামিতার আচরণকে প্রভাবিত করে। এই আচরনের মধ্যে কোন জীনগত বা বায়োলজিক্যাল কারণ নেই।
সমকামিতার সমর্থকেরা কিন্সের যেই গবেষণার রেফারেন্স দেন সেখানেও দেখা গেছে সমকামিতার প্রকোপ একটি বিশেষ বয়েসে সবচেয়ে বেশী। পুরুষদের জন্য ১৬-২০ বছর আর নারীদের জন্য ১১-১৫ বছর। এর আগে বা পরে সমকামি আচরনের হার লক্ষণীয় ভাবে কম। পাঠক বয়সটা লক্ষ করুন যেই বয়সে যৌন ফ্যান্টাসির প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশী কিন্তু বিপরীত লিঙ্গের যৌন সঙ্গি পাওয়া কিঞ্চিত কঠিন সেই সময়েই সমকামিতার প্রাদুর্ভাব বেশী। যদি এই সমকামিতা জিন গত হত তাহলে এটার হার মটামুটি সব বয়সেই সমান থাকতো।
এর পরে ১৯৯৪ সালে একই ধরনের গবেষণা করা হয় জদিও স্ট্যাডি ডিজাইন একটু ভিন্ন ছিল। তবুও আমরা একই ধরনের ফলাফল দেখতে পাবো। বয়স বাড়তে থাকলে সমকামিতার চর্চা কমতে থাকে এবং সম লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ ও কমতে থাকে।
সমাজের গড়ন যে এই সমকামি আচরণের জন্য মুখ্যত দায়ি সেটা আরেকটা কৌতূহল উদ্দীপক গবেষণায় ধরা পড়েছে। গ্রামে সমকামিতা সবচেয়ে কম। ছোট শহরে সমকামিতা গ্রামের চেয়ে কিছু বেশী। সবচেয়ে সমকামিতা বেশী বড় নগরে। নগরায়ন যত বেশী হয়েছে সমকামিতাও তাঁর সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে।
আমরা যদি তর্কের খাতিরে ধরেও নেই গ্রামের এক শতাংশ সমকামিতার হার এটা সমকামিতার ন্যুনতম স্বাভাবিক বা সহজাত হার। তবে বাকি ৩.৫ শতাংশ নিঃসন্দেহে সামাজিক পরিবেশের ফল।
সমাজ সমকামিতার বিষয়ে যত উৎসাহী হবে সমাজে সমকামিতা তত বাড়বে। এবং গবেষণাই বলছে সামাজিক প্রণোদনা সমকামি আচরণের প্রচার এবং প্রসারে ভুমিকা রাখছে।
চলবে……।।