পবিত্র শবে মেরাজ আজ
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৩-১১ ১১:৫৮:৩৭
আজ বুধবার (১১ মার্চ) সারাদেশে যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে উদযাপিত হবে পবিত্র শবে মেরাজ। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ২ এপ্রিল মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
পবিত্র শবে মেরাজ উপলক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ বুধবার বাদ আসর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ‘লাইলাতুল মেরাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’ শীর্ষক এক ওয়াজ ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মহিউদ্দিন কাসেম মি’রাজের গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিষয়ে জ্ঞানগর্ব আলোচনা করবেন। এতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নূরুল ইসলাম সভাপতিত্ব করবেন।
প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম নবুওয়াতের একাদশ বর্ষের ২৬ রজবের দিবাগত গভীর নিশিথে মহান আল্লাহর খাস রহমতে হযরত জিব্রাঈল আলাহিস্সালামের সাথে পবিত্র কাবা হতে ভূমধ্যসাগরের পূর্ব তীরে ফিলিস্তিনে অবস্থিত পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের উপর সিদরাতুল মুনতাহা, অত:পর সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন।
মেরাজকালে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম সৃষ্টি জগতের সমস্ত কিছুর রহস্য অবলোকন করেন। এ রাত অতি পবিত্র ও মহান আল্লাহ তায়ালার অফুরান রহমত-বরকত-মাগফিরাতে সমৃদ্ধ। আরবী শব্দ মেরাজ অর্থ উর্ধারোহণ। এ মেরাজের বড়দাগে অর্থ দাঁড়ায়-সপ্তম আসমান, সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন ও ধনুক কিংবা তার চে কম দূরত্বে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য পর্যন্ত ভ্রমণ।
এই রাত্রিতে উম্মতে মুহাম্মাদীর প্রতি ৫ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। ফলে এটা খুবই ফজিলতের রাত্রি। অতএব এই রাত্রিতে যতদূর সম্ভব জেগে নফল নামাজ, জিকির-আযকার, কুরআন তিলওয়াত ও দরুদ শরীফ ইত্যাদি পাঠ করা এবং নফল নিয়তে দিবা ভাগে রোজা রাখা ভাল, এগুলো ব্যাতীত এই রাত্রে অন্য কোন প্রকার শরীয়ত বিরোধী রুসম-রেওয়াজে লিপ্ত হওয়া যাবে না। আর যেহেতু এই রাতের তোহফা ৫ ওয়াক্ত নামাজ তাই বেশি বেশি নফল নামাজ পড়ে শুকরিয়া আদায় করা।
শবে মেরাজের ইবাদত সম্পর্কে হাদিস শরীফে উল্লেখ রয়েছে হযরত আবু হুরায়রা (রা.) ও সালমান ফারসী (রা.) থেকে বর্ণিত, নিঃসন্দেহে রজব মাসে এমন একটি মহান দিন ও রাত রয়েছে, কোন মোমিন যদি ঐদিনে রোযা রাখে ও রাতে নামাজে মশগুল থাকে, তার প্রতিদান হবে যেন সে একশ বছর দিনে নফল রোযা ও রাতে নফল নামাজ পড়েছে।
সেই মহান রাতটি হলো রজবের সাতাশতম রাত। (গুনিয়াতুত্বালিবীন)। তবে এ রাতকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা, আতশবাজি, আলোক সজ্জা ইত্যাদি সবই বিদ‘আতের পর্যায়ভুক্ত বলে মত দেন উলামারা।
হাদিস ও সাহাবিদের বর্ণনা অনুযায়ী, মেরাজের রাতে ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) রাসুল (সা.) নিয়ে কাবা শরিফের হাতিমে যান। জমজমের পানিতে অজুর পর বোরাক নামক বাহনে জেরুজালেমের বায়তুল মুকাদ্দাসে গিয়ে নামাজ আদায় করেন। এরপর প্রথম আকাশে পৌঁছান মহানবী (সা.)। সেখানে হজরত আদম (আ.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এভাবে সাত আকাশ পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে সাক্ষাৎ করেন হজরত ঈসা (আ.), হজরত ইয়াহইয়া (আ.), হজরত ইদ্রিস (আ.), হজরত হারুন (আ.), হজরত মুসা (আ.) এবং হজরত ইব্রাহিম (আ.)-এর সঙ্গে।
এরপর সপ্তম আকাশ থেকে সিদরাতুল মুনতাহায় গমন করেন মহানবী (সা.)। সেখান থেকে আরশে আজিম যান। এক ধনুক দূরত্ব থেকে আল্লাহর সঙ্গে কথোপকথন হয়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয় মহানবী (সা.)-এর উম্মতদের জন্য। মেরাজ শেষে পৃথিবীতে ফিরে রাসুল (সা.) পুরো ঘটনা হজরত আবু বকর (রা.)-এর কাছে বর্ণনা করেন। তিনি নিঃসংশয়ে তা বিশ্বাস করেন। রাসুল (সা.) তাকে সিদ্দিকী বা বিশ্বাসী খেতাব দেন।