বাড়ি ফিরল সুস্থ রাবেয়া-রোকেয়া

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৩-১৪ ১৭:৫০:০৭


দেশ-বিদেশের চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও একাগ্রতায় জোড়া মাথার যমজ বাচ্চা রাবেয়া-রোকেয়া স্বাধীন জীবনে ফিরতে সক্ষম হলো বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (১৪ মার্চ) সকালে ভিডিও কনফারেন্সে গণভবন থেকে সিএমএইচে রাবেয়া-রোকেয়া দীর্ঘ চিকিৎসার পর বাড়ির উদ্দেশে হাসপাতাল ছাড়ার অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে এই শিশু দুটির হাতে আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা কার্ড তুলে দেন সেনাপ্রধান।

উচ্ছ্বসিত প্রধানমন্ত্রী এ সময় রাবেয়া-রোকেয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

কেমন আছো, প্রধানমন্ত্রী জানতে চাইলে দুই বোনের একজন বলে, “ভালো, তুমি কেমন আছো?”

এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাই হেসে ওঠেন।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভালো। বাড়ি ফিরতে পেরে খুশি ”

এই সময় মাথা নেড়ে খুশির কথা জানায় শিশুটি।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, “আজকে রাবেয়া-রোকেয়া বাড়ি ফিরে যাবে। বাবা মা’র কোলে তারা হেসে-খেলে বেড়াবে, এটা সত্যিই খুব বড় পাওয়া।

“আমরা যেখানে মুজিববর্ষ পালন করছি, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী আমরা উদযাপন করছি, এই বছরে সেই সময়ে এত বড় একটা সফল অস্ত্রোপচার করা, সফলতা অর্জন করা, এটা বাংলাদেশের জন্য অনেক বিরাট অর্জন।”

২০১৬ সালের ১৬ জুলাই পাবনার চাটমোহরের আটলংকা গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও তাসলিমা খাতুন দম্পতির ঘরে জোড়া মাথা নিয়ে জন্ম নেয় রাবেয়া-রোকেয়া। জন্ম নেয়ার বয়স হয়েছে পাঁচ বছর হয়ে গেলেও প্রকৃতির খেয়ালে মাথা জোড়া লাগানো অবস্থা থেকে মুক্তিতেই রাবেয়া-রোকেয়ার কেটে গেছে দীর্ঘ চার বছর।

২০২০ সালের ১ অগাস্ট ঢাকার সিএমএইচে এই জোড়া মাথা আলাদা করার জটিল অস্ত্রোপচার শুরু হয় এবং হাঙ্গেরি ও বাংলাদেশ এর প্রায় দেড়শ’ জনের চিকিৎসক দল ৩৩ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে রাবেয়া-রোকেয়াকে আলাদা করা সম্ভব হয়, যা বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক অনন্য সাফল্য বলে মনে করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি খুব আনন্দিত যে এত দীর্ঘ সময়ের পর রাবেয়া-রোকেয়া সফল অস্ত্রপচার হয়েছে। সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করেছে বলেই আজ এই সাফল্য এসেছে।

জটিল এই অপারেশন ফ্রিডম দেশের চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতা বাড়িয়ে তুলেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

দুই বোনের মধ্যে রাবেয়া সম্পূর্ণ সুস্থ হলেও রোকেয়ার কিছু নিউরো জটিলতা রয়েছে বলে জানান চিকিৎসকরা। তবে তারা আশাবাদী, বিরল এই শিশু দুটি অবশ্যই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সক্ষম হবে। দীর্ঘ এ যাত্রায় সবসময় তাদের পাশে থাকবে দেশের সব সিএমএইচগুলো।

সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল প্রান্তে এই সময় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।