উদ্ভাবনী চিন্তা থেকেই সফল হলেন ডা. সালমা পারভীন
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২১-০৩-১৫ ১৮:৪৮:৫৭
সাক্ষাৎকার: ছোট বেলা থেকেই ছিলো নানারকম উদ্ভাবনী চিন্তা।সেই চিন্তা থেকেই অদম্য প্রচেষ্টায় মাসালা চা আর স্পঞ্জ রসগোল্লা নিয়ে কাজ করে নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন ডা. সালমা পারভীন।তিনি শেরপুর জেলার মেয়ে, থাকেন মোহাম্মদপুর ঢাকায়।
ডা. সালমা পারভীন তার উদ্যোক্তা জীবনের গল্পটা সানবিডি প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।
‘আস্সালামু আলাইকুম।নতুন কিছু উদ্ভাবন করার চেষ্টা ছিলো অনেক ছোট থেকেই। ক্লাস সিক্সে পড়ি তখনই জাতীয় বিজ্ঞান মেলায় প্রথমবার অংশ নেই। সেইবার ২য় পুরস্কার পাই।এভাবে চলে যায় স্কুল থেকে কলেজ। কলেজ থেকেও বিজ্ঞান মেলায় অংশ নিয়ে প্রথম হলাম। নিজের মধ্যে একটা আত্মবিশ্বাস কাজ করতে শুরু করলো। আমি কিছু করতে চাইলে পারবো। রচনা প্রতিযোগিতা আবৃত্তি ,যা করেছি আলহামদুলিল্লাহ সব জায়গায় একটা পজিশনে থাকতাম। পড়ালেখা শেষ হওয়ার আগেই বিয়ে হয়। তারপরও প্রথম স্থান পেয়ে লেখাপড়া শেষ করি।ইন্টার্নি শেষ করি ভালোভাবেই।
সালমা পারভীন বলেন, ‘চাকুরী করলেও কিছু করার ইচ্ছা সেটা আমার ভিতর ছিল। তবে ছেলে হাসতে ভুলে যাচ্ছে দেখে চাকুরী ছেড়ে দিলাম। সংসার করতে করতে ভুলতেই বসেছিলাম নিজের পেশাকে। আবারও পড়তে শুরু করলাম।নিজের ভিতর সেই আত্মবিশ্বাস বাড়াতে শুরু করলাম। আমি পারবো। একটা চেম্বারে বসা শুরু করলাম। পেশার পাশাপাশি একটা নেশা ছিল রান্না করা। নতুন নতুন কিছু করার নিজের আইডিয়া দিয়ে। যায় হোক করোনা কালীন হঠাৎ করে জীবনে চলে এলো লকডাউন। চেম্বারটাও বন্ধ হয়ে গেলো। ঘরে বসে বসে কাজে একঘেয়েমি চলে এসেছিল। শুরু করলাম অনলাইনে চিকিৎসা সেবা। সেই সাথে ভাবতে থাকতাম কিভাবে ইমিউনিটি বৃদ্ধি করা যায়। তৈরি করলাম মাসালা চা। সেই সময় পেলাম উই (উইমেন্স অ্যান্ড ই- কমার্স ফোরাম) এর মত সুন্দর একটি গ্রুপ এর সন্ধান। সবার লেখা পড়ে নিজেও লিখতে শুরু করলাম। মাসালা চা দিয়ে আমার উদ্যোক্তার যাত্রা শুরু। মাসালা চা, আমার পড়ালেখা কাজে লাগিয়ে তৈরি করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার হারবাল নিয়ে পড়ালেখার জ্ঞান আমি কাজে লাগিয়েছি। সেই সাথে আমার নেশা রান্না নিয়ে উদ্যোগ শুরু করি এবং এ কাজে সবার অনেক ভালো রেসপন্স পেলাম। মাসালা চা আর স্পঞ্জ রসগোল্লা দিয়ে যাত্রা শুরু করে উই থেকে লাখপতি ও হলাম। নিজের যে একটা কিছু করার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল সেই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি উই এর মত প্ল্যাটফর্ম এর জন্যেই। উই প্রেসিডেণ্ট নাসিমা আক্তার নিশা কে ধন্যবাদ এই জন্যে তার থেকে শিখেছি,অনুপ্রেরণা পেয়েছি কিভাবে উদ্যোক্তা হওয়া যায়। উদ্যোক্তা কি এই সম্পর্কে আমার কোন ধারণা ছিল না। কিভাবে অনলাইন বিজনেস করতে হয়। উই থেকে বিভিন্ন ওয়ার্কশপ এবং মাস্টার ক্লাসের মাধ্যমে অনেক খুঁটিনাটি বিষয় জেনে তা আমি আমার উদ্যোগের কাজে লাগিয়ে যাচ্ছি।
তিনি তার কাজকে এগিয়ে নিতে ‘প্রকৃতির ছোঁয়া’ নামে একটি অনলাইন পেজ চালু করেছেন।এই পেজের মাধ্যমে পণ্যের প্রচার ও সেল করেন।তিনি এখন পর্যন্ত ৩ লাখ টাকার উপরে পণ্য সেল করেছেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার এই উদ্যোগের মাধ্যমে নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে চাই এবং অনেকের কর্মসংস্থান করতে চাই।’
সানবিডি/ফাহমিদ জামান