করোনার কাছেই প্রথম হারলেন ৭ বারের চসিক কাউন্সিলর

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৩-১৮ ১৮:০২:২২


চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) সাতবারের কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি … রাজিউন)। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোর সোয়া ৫টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর। চট্টগ্রামে তিনি ‘মিন্টু কমিশনার’ ও ‘মিন্টু ভাই’ নামে পরিচিত ছিলেন।

সাইয়েদ গোলাম হায়দার ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত তৎকালীন চট্টগ্রাম পৌরসভার নির্বাচিত কমিশনার ছিলেন এবং পরে ১৯৯৪ সালের জানুয়ারি থেকে পরপর ছয় মেয়াদে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর পদে নির্বাচিত হন। সর্বশেষ গত ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও তিনি কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।

নির্বাচনে একবারও হার না মানা নগরের ১৬ নম্বর চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইয়্যেদ গোলাম হায়দার মিন্টু শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেন করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) কাছে।

নন্দিত এই রাজনীতিক চকবাজার আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

এদিকে আজ বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সম্মেলনকক্ষে প্যানেল মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাউন্সিলর গোলাম হায়দারের মৃত্যুতে এই নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন ও জহর লাল হাজারী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু ১৯৪৯ সালে চট্টগ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কর্মজীবনের সূচনা করেন মূক ও বধির বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মাধ্যমে। ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতিতে জড়িত মিন্টু সমাজসেবার শত ব্যস্ততার মাঝেও নগরীর মুরাদপুরে মূক ও বধির বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজ চালিয়ে গেছেন।

অত্যন্ত সাদাসিধে ও সহজ সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত সাইয়্যেদ গোলাম হায়দার মিন্টু সিটি করপোরেশন প্রদত্ত কাউন্সিলরভাতা দিয়েই দৈনন্দিন জীবন অতিবাহিত করতেন। এর বাইরে তার কোনো পেশা-আয় বা জীবিকা ছিল না।

১৯৭৭ সালে ২৭ বছর বয়সে প্রথম চট্টগ্রাম পৌরসভার কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন গোলাম হায়দার মিন্টু। ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির শাসনামলে আওয়ামী লীগ নির্বাচন বর্জন করায় সেই নির্বাচনে অংশ নেননি তিনি। পরে ১৯৯৪ সালের জানুয়ারি থেকে প্রতিবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিটে অংশ নিয়ে সববারই বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন।

এদিকে দীর্ঘদিনের এই জনপ্রতিনিধিকে হারিয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পুরো চট্টগ্রামে।