বায়তুল মোকাররমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-০৩-২৭ ১৪:১৭:৪০
দেশের দু্ই জায়গায় পুলিশ-ছাত্রলীগের সাথে হেফাজতে ইসলামের সংঘর্ষে দলীয় নেতা-কর্মী নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে বিক্ষোভ করছে সংগঠনটি।
শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে একটি ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন হেফাজতের নেতাকর্মীরা। সেখানে হেফাজতের প্রায় এক হাজার নেতাকর্মী জড়ো হয়েছেন। বিক্ষোভ থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রতিবাদী স্লোগান দিতে দেখা গেছে হেফাজতের কর্মীদের।
বিক্ষোভে যোগ দিতে সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক বায়তুল মোকাররমে আসছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে বেলা ৩টায় পল্টনে আরেকটি বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। সংগঠনটির প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ুম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে হেফাজতের বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে বায়তুল মোকাররম ও আশপাশের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ। পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন মসজিদ এলাকায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে পল্টন মোড়ে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। এছাড়া বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটের পাশেও অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। পাশাপাশি বায়তুল মোকাররমের পাশে অর্থাৎ পল্টন মোড়ে রায়টকার, জলকামান ও প্রিজন ভ্যান রাখা রয়েছে।
এছাড়া বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদেরও আজ বিক্ষোভ মিছিল করার কথা রয়েছে। এই মিছিলকে কেন্দ্র করেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পুলিশ।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) মর্যাদার একজন কর্মকর্তা শনিবার সকালে ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, বায়তুল মোকাররম এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব ও বিজিবির টহল রয়েছে। যেকোনো ধরনের নাশকতা বা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে প্রতিবাদে নেমে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন ইসলামি দলগুলোর নেতাকর্মীরা। জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় অর্ধশতাধিক আহত হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়।
ওইদিন বিকেল থেকে যাত্রাবাড়ী এলাকার একটি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে রাতে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। পরে রাত ৯টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
এছাড়া নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতেও হেফাজতের মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় চারজন নিহত হন। এছাড়া বেশ কয়েকজন আহত হন। শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রামে মাদরাসাছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলার খবরে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। শুক্রবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা সদরের বিভিন্নস্থানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধরা। বিক্ষোভের ঘটনায় আশিক (২০) নামে এক তরুণ নিহত হন।
এসব সহিংস ঘটনার পর শনিবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ এবং রোববার (২৮ মার্চ) হরতালের ডাক দেয় হেফাজতে ইসলাম। এক ভিডিও বার্তায় হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এ ঘোষণা দেন।