বাংলাদেশে বড় ধরনের জাপানি বিনিয়োগের প্রত্যাশা জেট্রো’র
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৪-১০ ০৯:২০:৪৭
প্রতিযোগিতামূলক শ্রম মূল্য, মাথাপিছু আয়ের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এবং ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে জাপান এক্সটার্নাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) বাংলাদেশে বড় আকারের জাপানি বিনিয়োগের ব্যাপারে আশাবাদী।
জাপানের একজন বাণিজ্য কূটনীতিক অভিমত ব্যক্ত করেন, আরো জাপানি বিনিয়োগকারী আকৃষ্ট করার জন্য বাংলাদেশকে বিনিয়োগের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে এবং সহজে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ডুইং বিজনেস সূচকে এর অবস্থান উন্নত করতে হবে।
জেট্রো’র দেশীয় প্রতিনিধি ইউজি আন্দো বলেন, জাপানি উদ্যোক্তাদের অন্যতম প্রধান গন্তব্য বাংলাদেশ এবং তারা প্রতিযোগিতামূলক মানবসম্পদ এবং বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজারের সুবিধা নিয়ে তৈরি পোশাক (আরএমজি), টেক্সটাইল, আইটি এবং অবকাঠামোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করছে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে কাজ করা জাপানি কোম্পানির সংখ্যা ১০ বছরে প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১০ সালে ৮৩টি জাপানি প্রতিষ্ঠান থেকে বর্তমানে ৩২১ টি প্রতিষ্ঠান দেশে তাদের ব্যবসা চালাচ্ছে।
তিনি জানান, অনেক জাপানি উদ্যোক্তা দেশের বৈদ্যুতিক ও ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করছেন। চলমান মহামারীর কারণে জাপানি বিনিয়োগের প্রবাহ এখন ধীর গতিতে চলছে। তবে, আশা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগে নারায়ণগঞ্জ জেলার আওতাধীন আড়াইহাজার উপজেলায় জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এই বিনিয়োগ আরো অনেক বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরসহ জাপানি সরকারি উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) প্রকল্পে কাজ করার জন্য অনেক জাপানি অবকাঠামো উন্নয়ন কোম্পানি বাংলাদেশে আসছে।
জাপানি উদ্যোক্তারা দেশের উৎপাদন, দ্রুত গতিশীল ভোগ্যপণ্য (এফএমসিজি), অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ভিত্তিক স্টার্টআপ কোম্পানিতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, জাপানি সংস্থাগুলো পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) পদ্ধতির আওতায় বিভিন্ন প্রকল্পেও বিনিয়োগ করছে।
তবে, ইউজি আন্দো জাপানি কোম্পানি এবং বাংলাদেশের অন্যান্য বিদেশী কোম্পানিগুলোর জন্য অবকাঠামো ও কর আরোপের উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, অনেক চ্যালেঞ্জ এখনো বিদ্যমান। শাখা অফিস কর্তৃক সুষ্ঠু বৈদেশিক রেমিটেন্স এবং মূল কোম্পানি থেকে কার্যকরী মূলধনের জন্য বৈদেশিক ঋণ নিশ্চিত করতে বৈদেশিক মুদ্রাবিধি পরিবর্তনে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান।
এছাড়া, রয়্যালটি বা প্রযুক্তিগত সহায়তা রেমিটেন্স এবং আমদানি বাণিজ্যের জন্য টেলিগ্রাফিক ট্রান্সফার (টিটি) রেমিটেন্সের সীমা তুলে নেওয়ার উপর জোর দেন। কর ও ভ্যাট ব্যবস্থায় সহজ পরিষেবা এবং সহজ নিবন্ধন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
তিনি এসময় বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে জাপান বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে এবং বাণিজ্যিক সম্পর্ক দিন দিন শক্তিশালী ও উৎপাদনশীল হচ্ছে।
আরও জাপানি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে বাংলাদেশ কর্পোরেট গভর্নেন্স এবং আরও বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশের মতো বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া দরকার বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।
জাপান ও বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং পারস্পরিক সফরের মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। জাপান বাংলাদেশের জন্য একটি প্রধান উন্নয়ন অংশীদার, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের প্রচেষ্টায় সহায়তা প্রদান করে আসছে।
সূত্র: বাসস
/সানবিডি/ এ এ