মেম্বরের নির্দেশে সেই লিচু গাছের আমটি ছিড়ে নেয়ার অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি আপডেট: ২০২১-০৪-২০ ১৪:২৫:২৬


ঠাকুরগাঁওয়ে লিচু গাছের সাড়া জাগানো আমটি কে বা কারা ছিড়ে নিয়ে গেছে। গাছের মালিক আব্দুর রহমান ক্ষোভের সাথে জানান, এলাকার সিকিম মেম্বারের নির্দেশে এক বাচ্চা ছেলে আমটি ছিড়েছে। আজ সকালেও আমটি ছিল।

সকাল ১০ টার দিকে সিকিম মেম্বার এখানে আসে। তাঁর পিছনে ২/৩ টি পিচ্চি ছিল। তারা আমটি ছিড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। অন্যান্য ছেলেদের চিৎকারে গাছের কাছে গিয়ে তিনি দেখতে পান আমটি নেই। দারুণ মুষড়ে পড়েন তিনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমটি রক্ষার জন্য তিনি সব ব্যবস্থা নিয়েছিলেন।

আমটি ছিড়ে ফেলায় গাছের মালিক আব্দুর রহমানের সাথে এলাকাবাসীও খুবই মর্মাহত ও হতাশ।

 

তবে সিকিম মেম্বার বলেন, লিচু গাছে আমটি দেখার পর তার কাছে অজস্র ফোন আসতে থাকে বিষয়টি জানার জন্য। এতে তিনি খুব বিরক্ত হন। তাছাড়া তার এক আত্মীয় আমটি দেখার জন্য মোটরসাইকেলযোগে আসতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। তাই তিনি রাগের মাথায় আমটি ছিড়ে ফেলার কথা বলেছেন। আসলে আমি আমটি ছিড়িনি বা কাউকে ছিড়তে বলিনি।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। গবেষণার জন্য আমটির দরকার ছিল। তিনি জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে প্রিন্সিপাল সাইন্টিফিক অফিসার পদ মর্যাদার একজন গবেষক ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান আমটি নেই।

প্রসঙ্গত, সদর উপজেলার ছোট বালিয়া গ্রামের আব্দুর রহমান (মটকি)’র বাড়িতে একটি লিচু গাছের একটি ডালে ছোট ছোট ৯ টি লিচু ধরেছে। ওই গাছে লিচুর একটি থোকায় লিচুর সাথে আম ধরে আছে দেখা যায়। বিষয়টি মটকির নাতি হৃদয় প্রথম দেখতে পায়। সে বিষয়টি তার দাদাকে জানায় ও পরে এলাকার লোকজন জানতে পারেন।

ঘটনাটি এখানে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। এলাকার লোকজন লিচু গাছে আম ধরেছে এই ঘটনাটি দেখার জন্য সেখানে ভিড় করে। মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে ও দূর দূরান্তের লোকজন এক নজর দেখার জন্য সেখানে গিয়ে নিজের চোখে দেখে আসছেন।

তবে এব্যাপারে ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা (প্রশিক্ষণ) মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, লিচু গাছে আম ধরার বিষয়টি একটি ব্যতিক্রম ঘটনা। এর কোন বৈজ্ঞানিক কারণ বা গ্রামার নেই। ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হোসেন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেন, লিচুর গাছে আম আকৃতির ফল ধরেছে।

পরাগায়ন বা অন্য কোন মাধ্যমে এটা হওয়ার কথা নয়। এখানে গবেষণার বিষয় রয়েছে। লিচু ফলটি বিকৃত হতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। আমটি না থাকায় আর গবেষণা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।