সাতক্ষীরায় তিন মাসে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত ১১শ জন

জেলা প্রতিনিধি আপডেট: ২০২১-০৫-০১ ১০:২০:১২


সাতক্ষীরায় গত তিন মাসে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন শিশু ও নারীসহ ১ হাজার ১০০ জন। তারা সবাই জলাতঙ্ক থেকে রক্ষা পেতে ‘র‌্যাবিস ভ্যাকসিন’ গ্রহণ করেছেন। অপরদিকে অন্যান্য প্রাণীর কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৯৯ জন। জেলার বিভিন্ন এলাকায় দিন দিন বেড়েই চলছে কুকুরের এমন উপদ্রব। এতে অতিষ্ঠ পথচারী, বৃদ্ধসহ কোমলমতি শিশুরাও।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত জানুয়ারি মাসে ৪৬৪, ফেব্রুয়ারি মাসে ৩২৪ ও মার্চ মাসে ৩১২ জন কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য প্রাণীর কামড়ে জানুয়ারি মাসে ১৬৩, ফেব্রুয়ারি মাসে ১৭৯ ও মার্চ মাসে ১৫৭ জন আক্রান্ত হয়ে সেবা গ্রহণ করেন। তাদের বেশির ভাগই শিশু ও বয়স্ক।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগেও সদর হাসপাতালে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে আসা প্রতিদিন গড়ে ১২০ থেকে ১৮০ জন রোগীকে বিনা মূল্যে ভ্যাকসিন (টিকা) দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।

সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতী বলেন, ‘প্রতিবছর পৌর কর্তৃপক্ষ কুকুর নিধন কর্মসূচি পরিচালনা করত। কিন্তু কুকুর নিধন চালানো বন্ধে হাইকোর্টে রিটের কারণে ২০১৮ সালের শুরু থেকে তা বন্ধ আছে। এরপর থেকে ভ্যাকসিন বাবদ কোনো সহায়তা না পাওয়ায় এখন কুকুরের ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচিও বন্ধ রয়েছে।’

জেলা নাগরিক কমিটির নেতা আলি নুর খান বাবুল জানান, জনবহুল জেলা সাতক্ষীরায় জেলার সাতটি উপজেলা, দুটি পৌরসভা ও ৭৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন হাট-বাজার, পাড়া-মহল্লায় প্রায় ১৫ হাজারের অধিক কুকুর রয়েছে। ওই কুকুরগুলো মহামারির সময় খাদ্য সংকটে পড়ে দিনদিন হিংস্র হয়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত মানুষকে কামড় দিয়ে আহত করছে তারা। কুকুরগুলোর হিংস্রতা বন্ধের জন্য জেলা প্রাণী সম্পদ অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘জেলায় প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজারের অধিক কুকুর রয়েছে। সম্প্রতি ওই কুকুরগুলো ক্ষুধার জ্বালায় অতিষ্ঠ। তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পথচারীদের কামড় দিয়ে আহত করছে। কিন্তু আগেও মতো এখন আর ওই কুকুরগুলো মেরে ফেলার নির্দেশনা নেই। সেজন্য তাদেরকে না মেরে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা দেয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ওই কুকুরের টিকা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আমরা শুধু টেকনিক্যাল সার্পোট (কারিগরি সহায়তা) দিয়ে থাকি। তবে কেন কুকুরের জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা বন্ধ আছে তা আমি বলতে পারব না।’

এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. শাফাওয়াত হোসেন বলেন, ‘সরকারি নির্দেশে কুকুর মারা ও প্রতিষেধক ভ্যাকসিন (টিকা) সরবারহ বন্ধ আছে। তবে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীদের জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ র‌্যাবিস ভ্যাকসিন আছে। ভ্যাকসিন সংকটের কোনো কারণ নেই।’