পুঁজিবাজারে ২০ হাজার কোটি টাকা আনতে আইন পাশ
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৫-০৩ ২১:১০:৪৫
পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত কোম্পানি ও মিউচুয়্যাল ফান্ডের ব্যবস্থাপকদের কাছে অলস পড়ে আছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। অলস এই টাকা বিনিয়োগে নীতিমালা চুড়ান্ত করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশনের (বিএসইসি)। গতকাল কমিশনের নিয়মিত ৭৭২তম সভায় আইনের খসড়াটি অনুমোদন দিয়েছে কমিশন। খুব শিগগির এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
বিএসইসি জানিয়েছে, তহবিলটির নাম হবে ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল’। শুরুতে এ তহবিলে যুক্ত হবে পুঁজিবাজারের প্রতিষ্ঠানগুলোর বিতরণ না হওয়া লভ্যাংশ। আইন করে এসব লভ্যাংশ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে তহবিলে নিয়ে আসা হবে। বর্তমানে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হাতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার সমমূল্যের বিতরণ না হওয়া লভ্যাংশ রয়েছে। যার মধ্যে নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার। আর বোনাস লভ্যাংশের বাজার মূল্য প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
সূত্র মতে, এই ফান্ডের নাম হবে ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবলিস্টমেন্ট ফান্ড অব বিএসইসি’। প্রাথমিকভাবে এর আকার হবে প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা। এর আকার আরও বড় হতে পারে। কারণ সব কোম্পানির তথ্য এখনো বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে কমিশনের (বিএসইসি) কাছে আসেনি। অন্যদিকে মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলোর তথ্য এখানে যুক্ত করা হয়নি।
বিএসইসি’র সূত্র মতে, পুঁজিবাজারকে সাপোর্ট দিতে এই ফান্ড গঠন করা হচ্ছে। ফান্ড পরিচালনায় ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হবে। এর মধ্যে বিএসইসি থেকে চার জন,ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ,সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল) ও সেন্ট্রাল কাউন্টারপার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডে (সিসিবিএল) থেকে একজন করে প্রতিনিধি থাকতে পারে। তবে এটি চূড়ান্ত নয়। জনমত জরিপের পর বিস্তারিত প্রকাশ করবে বিএসইসি।
এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ সানবিডিকে বলেন, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে একটি ফান্ড গঠন করার কাজ করছে বিএসইসি। এই ফান্ডগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আকারে পড়ে আছে।
তিনি বলেন, ফান্ডের ব্যবহারের জন্য একটি ১১ সদস্যের একটি কমিটি হবে। তাদের অধিনে কয়েকটি কমিটি থাকবে। তারা একটি নীতিমালা করবে।আর নির্বাহীরা তা বাস্তবায়ন করবে। যেমন একটি ক্রয়-বিক্রয় কমিটি থাকবে। এর নের্তৃত্ব দিবে প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা। আরকটি অডিট কমিটি থাকবে তারা নিয়মিত অডিট করবে। এমনই এই ফান্ডের কার্যক্রম চলবে।
নতুন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথমে ২০২০ সালের ১২ নভেম্বর তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে অবন্টিত লভ্যাংশের তথ্য চেয়ে একটি চিঠি ইস্যু করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল)। সেখানে প্রতিষ্ঠান তিনটিকে পরবর্তী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তথ্য চেয়ে কোম্পানিগুলোকে চিঠি দিতে বলা হয়। পরবর্তীতে ডিএসই কোম্পানিগুলোকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিষ্টেড কোম্পানিজের (বিএপিএলসি) সভাপতি আজম জে চৌধুরীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও ৭ দিন সময় বাড়িয়েছে বিএসইসি। এর পর ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। বিএসইসির উপ-পরিচালক মো. কাউসার আলী স্বাক্ষরিত চিঠিতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, বছর শেষে আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। পরবর্তীতে কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভায় পর্ষদের ঘোষিত লভ্যাংশ অনুমোদন করেন শেয়ারহোল্ডাররা। অনুমোদনের ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে এই লভ্যাংশ বিনিয়োগকারীদের কাছে পৌঁছাতে হয়। অনেক সময় শেয়ারহোল্ডারদের ব্যাংক হিসাব বা ঠিকানা ভুল থাকলে লভ্যাংশ যায় না। এই জন্য কোম্পানিগুলো আলাদা একটি হিসাব খুলে এগুলো জমা রাখে। যাতে করে পরবর্তীতে কোন শেয়ারহোল্ডার অভিযোগ করলে তা পূরণ করা যায়। এই পরিমাণ অনেক হয়েছে বলে মনে করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে এটি একটি কার্যকর অবস্থা তৈরি করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯ এর ১১ ধারার ২ উপ-ধারা অনুযায়ী বিএসইসি তার নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে যে কোন সময়, যে কোন তথ্য চাইতে পারে কমিশন।