বেক্সিমকোর বন্ডের অনুমোদন পেতে আবেদন বিএসইসিতে

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৫-০৬ ০৮:৫০:৫১


পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিবিধ খাতের বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) সুকুক বন্ড ইস্যু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি ৩ হাজার কোটি টাকা সংগ্রহ করবে। বন্ডটি অনুমোদনের জন্য পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) আবেদন করেছে কোম্পানিটি।

বিএসইসি সূত্র মতে, গত ২৯ মার্চ বিএসইসিতে আবেদন করা হয়েছে। এর আগে বিশেষ সাধারণ সভায় (ইজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদন নিয়েছে কোম্পানিটি।

এ বিষয়ে কোম্পানি সচিব মোহাম্মদ আসাদ উল্লাহ বলেন, আমরা গত মাসে বিএসইসিতে আবেদন করেছি।

বন্ডটির ইস্যু ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছে দেশের অন্যতম মার্চেন্ট ব্যাংক সিটি ব্যাংক ক্যাপিটাল। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এরশাদ হোসেন বলেন, বেক্সিমকো লিমিটেডের সুকুকের মাধ্যমে নতুন একটি পণ্যের দাঁড় উন্মোচিত হচ্ছে। কাজটি সুন্দরভাবে সমাপ্ত করার জন্য বিএসইসি,এনবিআরসহ সব পর্যয়ের প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিত চাই। এটি অ্যাসেট বেক বন্ড। ফলে এখানে ঝুকি নাই। এই বন্ডের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা লাভোবান হবে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, বেক্সিমকোর বন্ডের আবেদন বিএসইসিতে জমা পড়েছে। বন্ডটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ কাজ করছে।

পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন 

Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজক্যাপিটাল ভিউজস্টক নিউজশেয়ারবাজারের খবরা-খবর

সূত্র মতে, ৩ হাজার কোটি টাকার জন্য দুইভাবে আবেদন করেছে কোম্পানিটি। এর মধ্যে ৭৫০ কোটি টাকা প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে তুলবে। বাকী টাকার ১৫শ কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এবং ৭৫০ কোটি টাকা সরাসরি শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বন্টন করা হবে।

জানা গেছে, সুকুকের মাধ্যমে সংগ্রহ করা অর্থ বেক্সিমকোর দুটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান তিস্তা সোলার লিমিটেড ও করতোয়া সোলার লিমিটেডে বিনিয়োগ করা হবে। এই দুটি কোম্পানি সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। এছাড়া বেক্সিমকোর বস্ত্র খাতের ব্যবসা সম্প্রসারণে যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সংগ্রহে বন্ডের অর্থ ব্যয় করা হবে।

সুকুকের ফেস ভ্যালু হবে ১০০ টাকা, একজন বিনিয়োগকারীকে কমপক্ষে ৫০টি সুকুক কিনতে হবে। এই সুকুকের মেয়াদ হবে ৫ বছর। সুকুক থেকে কমপক্ষে ৯ শতাংশ মুনাফা পাওয়া যাবে।বেক্সিমকো লিমিটেডের লভ্যাংশ ৯ শতাংশের বেশি হলে তার ১০ শতাংশ সুকুকের মুনাফার সাথে যুক্ত হবে।

সুকুকে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের শতভাগ বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ারে রূপান্তরের সুযোগ থাকবে। এক্ষেত্রে প্রতি বছর ২০ শতাংশ হারে সুকুক শেয়ারে রূপান্তর করা যাবে। গুণিতক হারে অর্থাৎ ৫, ১০, ১৫ ও ২০ শতাংশ রূপান্তরের সুযোগ থাকছে। কোনো বছর শেয়ারে রূপান্তরের সুযোগ গ্রহণ না করলে সেটি পরবর্তী বছরের করা যাবে। এ রূপান্তরের মূল্য নির্ধারিত হবে রেকর্ড তারিখের আগের ২০ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেক্সিমকোর শেয়ারের গড় মূল্যের ৭৫ শতাংশ। যদি কোনো বিনিয়োগকারী সুকুককে শেয়ারে রূপান্তর করতে না চান, তাহলে পাঁচ বছরে ওই সুকুকের অবসায়ন হবে।

ডিএসইসি সূত্র মতে,বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) ১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকভুক্ত হয়। বর্তমানে কোম্পানিটি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। কোম্পানিটির মোট শেয়ারের ৩০ দশমিক ৫৫ শতাংশ রয়েছে পরিচালকদের কাছে, ১৫ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী,১ দশমিক ৪৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের কাছে। এছাড়া ৫২দশমিক ৫৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে।

সর্বশেষ তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি -মার্চ’২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ২৮ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ২ টাকা ২ পয়সা।

এদিকে গত ৯ মাসে (জুলাই,২০২০ -মার্চ’২০২১) কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৮ টাকা ২৩ পয়সা। গত অর্থবছরের একই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় ছিলো ৫ টাকা ৮৪ পয়সা।