৯ মাসে এনবিআরের রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি ৭.৩১ শতাংশ
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২১-০৫-০৭ ১৪:৩২:২০
করোনা মহামারির মধ্যেও গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে বেশি রাজস্ব পাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আমদানি পর্যায়ে রাজস্ব সংগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় মোট রাজস্ব সংগ্রহে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্নিষ্টরা। চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) চূড়ান্ত হিসাবে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক খাতে রাজস্ব আদায়ে ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এনবিআর। যদিও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায়ে সাড়ে ৪৯ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (৬ মে) এনবিআর চলতি অর্থবছরের ৯ মাসের রাজস্ব সংগ্রহের প্রকাশিত তথ্য থেকে এসব বিষয় জানা গেছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের মার্চ পর্যন্ত ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৬৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা রাজস্বের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে এক লাখ ৭৮ হাজার ২৬৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। ঘাটতি ৪৯ হাজার ৫০১ কোটি ১৮ লাখ টাকা। গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছিল এক লাখ ৬৬ হাজার ১১৭ কোটি ৭ লাখ টাকা।
গত অর্থ বছরের তুলনায় ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে সক্ষম হলেও করোনার কারণে সৃষ্ট প্রতিকূল পরিবেশে রাজস্ব আহরণে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এনবিআর থেকে পাওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রথম ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) ৭ দশমিক ৩১ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে চূড়ান্ত হিসাবে মার্চ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি আদায় হয়েছে ভ্যাট খাত থেকে। এ খাতে আদায় হয়েছে ৬৮ হাজার ৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ১৩ শতাংশ। আর শতাংশ হিসাবে সাফল্য দেখিয়েছে আমদানি ও রফতানি শুল্ক খাতে।। এই খাতে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১২ দশমিক ১৫ শতাংশ বেশি রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এই খাতে আদায় হয়েছে ৫৩ হাজার ৯৮৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। অন্যদিকে, মার্চ পর্যন্ত আয়কর খাতে ৫৫ হাজার ৮০৩ কোটি ৯০ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত অর্থবছরের একই সময় এই খাতে আদায় হয়েছিল ৫২ হাজার ৮৪৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫ দশমিক ৫৯ শতাংশ। যেখানে গত অর্থবছরের একই সময়ে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্কে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৫৯, ৮ দশমিক ৯৬ এবং ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
করোনাকালে আয়কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের প্রবৃদ্ধিকে প্রাক-বাজেট উপলক্ষে বিভিন্ন আলোচনায় আশাব্যঞ্জক বলে দাবি করে এসেছেন এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।
এনবিআরের তিন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, রোজার ঈদ উপলক্ষে অর্থনীতিতে একটি বড় ধরনের গতি আসে। রাজস্ব আদায়েও ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। বিধিনিষেধে সবকিছু আরও পিছিয়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এ মুহূর্তে এনবিআরের বাড়তি কোনো উদ্যোগ নেওয়ারও সুযোগ নেই।
এদিকে বিধিনিষেধের আগে এনবিআর ২৯ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা কমানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে সুপারিশ করেছে। যা চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানা গেছে।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে এক লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে এক লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি এবং আমদানি শুল্ক থেকে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়।
সানবিডি/এএ