সেবা সপ্তাহে টিসিবির প্রতি ট্রাকে বাড়তি ২০০ লিটার তেল বিক্রি

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৫-০৮ ১২:০৪:৩১


পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গত ৩০ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত বিশেষ সেবা সপ্তাহের সময় নির্ধারিত থাকলেও বিশেষ বিবেচনায় এর সময়সীমা ৯ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)। এসময়ে প্রতিটি ট্রাকে ২০০ লিটার করে বাড়তি ভোজ্যতেল বিক্রি করেছে টিসিবি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযাযী পবিত্র রমজান ও ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে গত ৩০ এপ্রিল থেকে ৬ মে পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দফতরসমূহে ‘বিশেষ সেবা সপ্তাহ’ পালনের ঘোষণা দেয়া হয়। এই সময়ে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে বাজার মনিটরিং কার্য্ক্রম জোরদার করা হয়। নিত্যপণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য বন্দরসমূহসহে সকল পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা ঠিক রাখতে সমন্বয় কার্যক্রম অব্যাহত রাখে।

বিশেষ সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে টিসিবি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রী অধিক পরিমাণ জনগণের মধ্যে বিতরণের ব্যবস্থা নিয়েছে। এ ছাড়াও পণ্য বরাদ্দের পরিমাণ বৃদ্ধিসহ ট্রাকসেল বিক্রি কার্যক্রম বৃদ্ধি করেছে তারা।

এ বিষয়ে টিসিবির মুখপাত্র মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমরা বিশেষ সেবা সপ্তাহের কার্যক্রম ৯ মে রোববার পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছি। আগামীকাল (৯ মে) পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম চলবে। সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে আমরা প্রতিটি গাড়িতে ২০০ লিটার করে তেল বাড়িয়ে দিয়েছি। আগে ট্রাক প্রতি ১ হাজার ২০০ লিটার করে বিক্রি হতো, সেটা ১ হাজার ৪০০ লিটার করে দিয়েছি। ঢাকায় আগে ১০০টি ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রি হতো, সেটি বাড়িয়ে ১২০টি করা হয়েছে। সারাদেশে ৫২০টি ট্রাকে এই সময়ে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। সবগুলোতেই ২০০ লিটার করে বাড়তি তেল বিক্রি হয়েছে। যেহেতু তেলের চাহিদা বেশি তাই তেলের পরিমাণ বাড়িয়েছি, অন্যান্য পণ্য আগের মতোই রেখেছি। বর্তমানে আমরা ১০০ টাকায় লিটারপ্রতি তেল বিক্রি করছি।’

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘বিশেষ সেবা সপ্তাহ মূলত সরকারি একটি আনুষ্ঠানিকতা। বাজার মনিটরিংসহ আনুষঙ্গিক কাজগুলো সবসময়ই পরিচালনা করা হয়ে থাকে। আর টিসিবিও প্রয়োজনে পণ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করে। তবে সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে বাড়তি কিছু উদ্যোগ ছিল। সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে।’

এ ছাড়াও এই বিশেষ সেবা সপ্তাহে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুদ ও সরবরাহ, ন্যায্যমূল্যে ক্রয়-বিক্রয় এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী শুক্র ও শনিবারসহ সাতদিন বাজার তদারকি কার্যক্রম জোরদার করেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে দোকান-প্রতিষ্ঠানে পণ্যের মূল্য তালিকা প্রদর্শন করার বিষয়টি নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাজার তদারকিকালে সচেতনামূলক কর্মকাণ্ড জোরদারের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে তারা। বাজার অভিযান পরিচালনাকালে হ্যান্ডমাইকের মাধ্যমে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে সচেতনামূলক কার্যক্রম পরিচালনা এবং ‘মাস্ক পরিধান, করুন সুস্থ থাকুন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে ভোক্তা অধিকার পথচারীদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ এবং স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার উদ্যোগ নেয়।

বিশেষ সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো হতে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে রফতানির বিপরীতে ইস্যুকৃত সকল সার্টিফিকেট অব অরিজিন (সিও), জিএসপি, সাপটা, সাফটা, আপটা) আবেদনের তারিখের মধ্যে সেবা প্রদানের জন্য হেল্প ডেস্ক স্থাপন করে। এ ছাড়া রফতানি বিষয়ক যেকোনো পরামর্শ প্রদানের জন্য ‘পরামর্শ ডেস্ক স্থাপন’ করা হয়।

যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদফতর সিঙ্গেল প্রসেস প্রক্রিয়ায় কোম্পানি রেজিস্ট্রেশনে সেবাগ্রহীতাদের অনলাইনে আবেদন পূরণে সহায়তা করে এবং দুইদিনের মধ্যে মর্টগেজ নিবন্ধন (অনলাইন) কাজ সম্পন্ন ও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-মেইলে সার্টিফিকেট প্রদান করে। শেয়ার ট্রান্সফার সংক্রান্ত পেন্ডিং রিটার্ন রেকর্ডভুক্ত করণে ক্র্যাশ কর্মসূচি গ্রহণ এবং দীর্ঘদিনের পেন্ডিং রিটার্ন নিষ্পত্তিকরণের জন্য ক্র্যাশ প্রোগ্রাম গ্রহণ করে।

বাংলাদেশ চা বোর্ড চলতি মৌসুমে দেশে চায়ের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখার জন্য দেশের সকল চা বাগানে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণে সহায়তা প্রদান কার্যক্রম এবং অনলাইন চা রফতানি লাইসেন্স প্রদান অব্যাহত রাখে। ২০২১-২০২২ নিলামবর্ষের নিলাম কার্যক্রম চট্টগ্রাম ও শ্রীমঙ্গলে ৩ মে শুরু হয় এবং ‘দুটি পাতা একটি কুড়ি’ এবং ‘চা সেবা’ অ্যাপস দুটির মাধ্যমে গ্রাহক পর্যায় চা তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সেবা প্রদান অব্যাহত রাখে।

চলতি মৌসুমে দেশে চায়ের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখার জন্য চা বাগানের মৃত্তিকা পরীক্ষা, চায়ের নমুনা পরীক্ষা এবং পেস্টিসাইড অ্যানালাইসিস করে চা উৎপাদন সংশ্লিষ্টদের উপদেশ প্রদান অব্যাহত রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও চায়ের উৎপাদন স্বাভাবিক রাখার জন্য চা বাগানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়।