দায় দেনাসহ শাহ মোহাম্মদ সগীর কিনে নিচ্ছে সাদ মুসা গ্রুপ

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২১-০৬-২১ ০৯:১৩:২৪


দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্য (১৭১) মালিকানা পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযযোগে লেনদেন বন্ধ করে দেয় ডিএসই। এর পর থেকে চাপে পড়ে যায় কোম্পানিটি। চাপ থেকে মুক্ত হতে মালিকানা ছেড়ে দিচ্ছে কোম্পানি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

ব্রোকারেজ ব্যবসা শুরু করার বিষয়ে সাদ মুসা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ মহসিন বলেন, মানবিক কারণে শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানি আমরা কিনে নিচ্ছি। সকল প্রকার দায়-দেনাসহ কোম্পানির শতভাগ মালিকানা আমরা নিচ্ছি। নাম পরিবর্তন না করে আগের অফিস থেকেই আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু হবে।

পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন 

Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজক্যাপিটাল ভিউজস্টক নিউজশেয়ারবাজারের খবরা-খবর

তবে মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়ে শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির চেয়ারম্যান তাহমিনা জামান বলেন, মালিকানা পরিবর্তনের বিষয়ে আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না।

বিএসইসি সূত্রমতে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নতুন কাস্টমার কমপ্লেইন্ট অ্যাড্রেস মডিউলে (সিসিএএম) চালু করার পর শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের বিরুদ্ধে ৪৮টি অভিযোগ জমা পড়ে। এর বেশির ভাগই প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) জন্য গ্রাহকদের জমাকৃত টাকা ফেরত না পাওয়া সংক্রান্ত। এ বিষয়ে কমিশনের নির্দেশক্রমে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ডিএসই। পরিদর্শন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানি গ্রাহকদের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছে।

এ অবস্থায় বিএসইসির ৭০৩তম কমিশন সভায় দুটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রথমত, অবিলম্বে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের জন্য শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ রুলস, ১৯৮৭-এর রুল ৩(১এ) অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ডিএসইকে নির্দেশ দেবে বিএসইসি। এই ধারায় অভিযুক্ত ব্রোকারেজ প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন সনদ বাজেয়াপ্ত করে তা বিক্রির মাধ্যমে গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধের ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। দ্বিতীয় সিদ্ধান্ত হলো, এই আত্মসাতের ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী মামলা করার জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দেয়া হবে।

উল্লেখ্য, শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির ট্রেডিং কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বিএসইসির ৭০০তম জরুরি কমিশন সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটির ডিপোজিটরি পার্টিসিপেন্ট (ডিপি) কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে।

শাহ মোহাম্মদ সগীরের বিষয়ে বিএসইসি ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর ডিএসইর চেয়ারম্যান ও ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি বরাবর দুটি পৃথক চিঠি পাঠায়। চিঠিতে কমিশন গ্রাহকদের সম্পদ রক্ষায় ডিএসই ও ডিবিএকে সরাসরি কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানায়। তবে কমিশনের নির্দেশে ডিএসই এরই মধ্যে শাহ মোহাম্মদ সগীর অ্যান্ড কোম্পানিতে পরিদর্শন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, যেখানে প্রতিষ্ঠানটি কর্তৃক গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি উঠে এসেছে।

সাদ মুসা গ্রুপের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মহসিন বলেন, আমাদের মূল ব্যবসা হলো পোশাকের। দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে ব্যবসা করে আসছি। শুরু করেছিলাম ২০ জন শ্রমিক দিয়ে। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান। আশা করছি ব্রোকারে ব্যবসায়ও আমরা ভালো কিছু করবো।

১৯৮২ সালে পোশাক খাত দিয়ে ব্যবসা শুরু করে সাদ মুসা গ্রুপ। একের পর এক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এর উদ্যোক্তা মুহাম্মদ মহসিন। ফ্যাব্রিক্স, স্পিনিং, উইভিং, ডায়িং, প্রিন্টিং ও ফিনিশিং কারখানা চালু করেন। স্থাপন করেন রফতানিমুখী শিল্প পার্ক।