খোলা বাজারে দাম বেশি,গুদামে ভিড়ছে না বোরো চাষিরা
উপজেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৭-১৩ ২২:১২:৩৮
যশোরের মণিরামপুরে ধান নিয়ে সরকারি গুদামে আসছেন না বোরো চাষিরা। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে খোলা বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকরা গুদামে ধান দিচ্ছেন না। ফলে চলতি মৌসুমে বোরো সংগ্রহ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
চলতি মৌসুমে মণিরামপুর খাদ্যগুদামের মাধ্যমে কার্ডধারী কৃষকদের কাছ থেকে তিন হাজার ৫০০ মেট্রিক টন ধান ও এক হাজার ৮০ টন চাল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। একহাজার ৮০ টাকা মণ দরে ধান ও ৪০ টাকা কেজি দরে চালের দাম নির্ধারণ করা হয়। যা সংগ্রহ শুরু হয় গত ৬ মে থেকে। ধান চাল ক্রয় শুরু হয়ে একমাস আট দিন সময় পার হলেও এই পর্যন্ত মাত্র ১৯৫ টন ধান ও ৬৩৮ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম শিকদার।
গত দুই মৌসুমেও খোলা বাজারে দাম বেশি থাকায় সরকারি গুদামে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার খোলাবাজারে চিকন ধান এক হাজার ৩১০ টাকা এবং মোটাধান ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মণিরামপুরে চলতি মৌসুমে ২৭ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে। যার মধ্যে মাত্র ৫০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে মোটা ধান।
সরকার যেই দামে ধান কিনছেন সেটা মূলত মোটা ধানের দাম। যা এই অঞ্চলে উৎপন্ন হয়েছে নামমাত্র। ধান কাটার মুহূর্তে কৃষক পাকা ধান বাড়ি তুলে পরিষ্কার করা মাত্রই বাজারে বিক্রি করে ধার দেনা শোধ করেছেন। শুরু থেকে কৃষক ধানের চড়া দাম পেয়েছেন। সরকার যখন ধান ক্রয় শুরু করেছেন তখন অধিকাংশ কৃষকের গোলা শূন্য হয়ে গেছে।
মাহমুদকাটি গ্রামের কার্ডধারী কৃষক নূর ইসলাম বলেন, ১০০ মণের ওপরে ধান পাইছি। এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ১৫০ টাকা ধরে ধান বিক্রি করে দিয়েছি। কিছু ধান গোলায় আছে। গুদামে ধান দেব না। সরকার যে দাম দেচ্ছে তার থেকে বাজারে মণে ১০০-১৫০ টাকা বেশি পাচ্ছি। তাছাড়া গুদামে গেলে ধান ভিজা পরিষ্কার না ; নানা কথা অজুহাত দেখিয়ে ফিরিয়ে দেয়। আর ব্যাপারিরা বাড়ি থেকে যেমন তেমন ধান চড়া দামে নিয়ে যাচ্ছে।
মণিরামপুর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেলিম শিকদার বলেন, ৬ মে থেকে বোরো ধান চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত ১৯৫ টন ধান ও ৬৩৮ টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান ও কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষকদের গুদামে ধান আনতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। সংগ্রহ কাজ চলবে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। খোলা বাজারে ধানের দাম চড়া হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে ধান সংগ্রের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে এই কর্মকর্তার।
মণিরামপুরে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, ধীরগতিতে ধান-চাল কেনার কাজ চলছে। খোলা বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা গুদামে আসছে না। আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চেষ্টা করছি।
সানবিডি/এএ