কলাগাছ দিয়ে তৈরি হচ্ছে সুতা!
উপজেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৭-১৮ ১২:৪৫:২৯
চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার পাটাচোরা গ্রামের সারজেল আলীর ছেলে শাহিন আলী কলাগাছ দিয়ে তৈরি করছেন আঁশযুক্ত সুতা। দেশীয় প্রযুক্তিতে বিদ্যুৎচালিত মেশিন দিয়ে এই সুতা প্রস্তুত শুরু করেছেন শাহিন আলী । ইতোমধ্যে তৈরি সুতার মজুদ শুরু করছেন এই তরুণ উদ্যোক্তা। কলাগাছের এই সুতা দিয়ে তিনি বিভিন্ন ধরণের পণ্য ও শোপিচ তৈরি ও সুতা বিক্রি করে আসছেন প্রায় দেড় বছর যাবৎ। বিদেশ থেকে ফিরে বেকারত্বের অবসান ঘটাতে তিনি শুরু করেন তার এই নয়া উদ্যোগ।
শাহিন আলী মনে করেন, সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে কলাগাছের সুতা পাল্টে দিতে পারে এ অঞ্চলের বেকার যুবকদের ভাগ্য।
তিনি জানান, সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ও আশ্বাস পেলেও আজ অবদি কোনো প্রকার সহযোগিতা পাননি তিনি। ফলে অর্থের অভাবে কলাগাছের সুতা দিয়ে কুটিরশিল্প বা বড় ধরণের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার স্বপ্ন ব্যাহত হচ্ছে। এরপরও গ্রাম থেকে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছেন শাহিন আলী।
এ বিষয় শাহিন আলী বলেন, ‘শোপিচ ও পণ্যের মধ্যে রয়েছে টুপি, নৌকা, পাপস, স্যান্ডেল, ছিকা, শপিং ব্যাগ, কলমদানী ও ডিম রাখার পাত্র প্রভৃতি। এসব শোপিচ তৈরির জন্য আমার ১০ থেকে ১২ জন শ্রমিক রয়েছে। যাদেরকে সুতার ১ শ’ হাত বেনি তৈরি করতে ৫০ টাকা করে দিয়ে থাকি। আগামীতে পারটেক্সসহ বড় ধরণের শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। বর্তমানে প্রাথমিক অবস্থায় ২৫০ জনের শ্রমিক নিয়ে কাজ শুরু করার জন্য একটি জায়গা নির্ধারণ করেছি। তবে অর্থের অভাবে এগুতে পারছি না। কলাগাছের সুতা বিক্রি করে ইতোমধ্যে প্রায় দেড়লাখ টাকা আয় করেছি। তবে করোনার কারণে সুতাগুলো বিক্রি করতে পারছি না। এ ছাড়া সুতা নিয়ে ক্রেতারা ভালো মূল্য দিচ্ছে না। ফলে আমি চিন্তা করেছি, আমি এ সুতা দিয়ে বড় ধরণের শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলব।’
শাহিন আলী জানান, ‘দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান স্যার আমাকে সবসময় উৎসাহিত করে যাচ্ছেন এবং সকল প্রকার সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া বিসিক থেকে একটি ঋণের জন্য আবেদন করেছি। কৃষি মন্ত্রণালয়ে একজন সচিব এসে আমাকে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গেছে। জানি না কী হবে। কলাগাছের সুতা দিয়ে সামনে আমার একটি চমক আছে, এখন প্রকাশ করছি না। সুযোগ পেলে দেখিয়ে দেবো গ্রাম থেকেও শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে। তবে করোনার কারণে এবং অর্থের যোগান না পাওয়ার কারণে আমি আমার স্বপ্নগুলো বাস্তবায়ন করতে পারছি না।’
এ বিষয় দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: মনিরুজ্জামান বলেন, ‘তরুণ শাহিন আলীকে কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সার্বিক সহযোগিতা করব। ইতোমধ্যে আমরা ২৫ জনকে নিয়ে একটি আইসিটি স্কুল গড়ে তুলেছি। কলার সুতা দিয়ে এ অঞ্চলে কুটির শিল্পসহ বড় ধরণের শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটাকে কাজে লাগিয়ে এ অঞ্চলের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে বলে আমি আশাবাদী। এ বিয়ষ আমার সাধ্যমতো শাহিন আলীকে আমি সহযোগিতা করে যাব।’
সানবিডি/আরএইচ