প্লাস্টিক মেলায় বিদেশি মেশিনারির সমাহার

প্রকাশ: ২০১৬-০১-২৩ ১৪:০৫:২৯


প্লাস্টিকরাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে চায়না, ইতালি, জার্মান, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণে চলছে প্লাস্টিক মেলা। মেলায় বিদেশিরা মেশিনারি পণ্য এবং উৎপাদনশীল পণ্য নিয়ে প্রদর্শনী করছে। এতে দর্শনার্থীদের পদচারণায় জমে উঠেছে প্লাস্টিক মেলা।

সরেজমিনে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, মেলায় বিভিন্ন দেশের প্রদর্শনীর মধ্যে চায়না কোম্পানিগুলো এগিয়ে আছে। সেইসঙ্গে দেশীয় কোম্পানিগুলোর পণ্য প্রদর্শনও চলছে। পলিথিন, পিইটি বোতল উৎপাদন থেকে শুরু করে ঔষধের প্লাস্টিকের মোড়ক ছাড়াও সব ধরনের প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদনের মেশিন মেলায় দর্শনার্থীদের বাস্তবে দেখানো হচ্ছে।

এদিকে মেলায় সাধারণদের উপস্থিতি কম থাকলেও বিশেষ দর্শনার্থীদের ভীড় ছিল চোখে পড়ার মত। এসব দর্শনার্থীদের বেশির ভাগই নিজেদের প্লাস্টিক কারখানায় আধুনিক যন্ত্রপাতির খুঁজে এসেছেন এবং মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখছেন। সেই সঙ্গে স্টলে প্রদর্শিত যন্ত্রপাতি নিজেদের প্রতিষ্ঠানে বসিয়ে উৎপাদনে যাবার অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন।

মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সঙ্গে আলাপকালে অনেকে জানান, আমাদের দেশে প্লাস্টিক শিল্পের সম্ভাবনা অনেক বেশি। এসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে আধুনিক যন্ত্রপাতি কিনতে হলে বিভিন্ন দেশে ঘুরতে হয়। যা ব্যয়সাপেক্ষ। এ মেলার কারণে বিভিন্ন দেশের মেশিনারি পণ্য এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট তুলনা করাও সহজ। তাই সব মিলিয়ে এ মেলা প্লাস্টিক শিল্পে পিছিয়ে পড়াদের জন্য কাজে আসবে।

মেলায় লালবাগ থেকে আসা ইউসুফ আলী বলেন, ‘আমার কাখানায় প্লাস্টিকের খেলনা তৈরি করি। মেশিনটি অনেক আগে চায়না থেকে আনা। প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি আসছে। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে ব্যবসায় টিকে থাকা সম্ভব হবে না। অনেক দিন ধরেই চেষ্টা করছি দুয়েকটি দেশ ঘুরে মেরিনারিজ কিনবো। কিন্তু যাওয়া হয় না। প্লাস্টিক মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের মেরিশনারিজ প্রদর্শন করছে। মেলায় ঘুরে চায়নার একাটি আধুনিক প্রযুক্তির খেলনা উৎপাদনের মেশিন পছন্দ হয়েছে। চায়নিজ কোম্পানির সঙ্গে মেশিনটির দর-দাম চলছে। আশা করি মেশিনটি আমার কারখানায় স্থাপন করতে পারলে বেশি খেলনা প্রডাকশন করতে পারবো।’

মেলায় অংশগ্রহণকারী কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানিয়েছেন, প্রচারের জন্য প্লাস্টিকের পণ্য প্রদর্শন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে বিদেশিরা তাদের আধুনিক প্রযুক্তির মেশিনারীজ প্রদর্শন করেছে। এতে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের প্লাস্টিক শিল্পে জ্ঞান আদান প্রদান হবে। তাছাড়া যেসব ব্যবসায়ী বিদেশে ঘুরে মেশিনাজি কিনতে চায় তাদের জন্য মেলা সহজ করে দিলো। মেলায় একই ছাদের নিচে অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান থাকায় ক্রেতাদের জন্য সুবিধা হয়েছে।

মেলায় অংশগ্রহণকারী চায়নার চুং এন মিং রং কোম্পানি কর্তৃপক্ষ জানান, বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময়ী দেশ। মেলায় আগত ক্রেতাদের ভালো সাড়া পেয়েছি। ব্যবসায়ীরা আমাদের পণ্য কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ মেলার মাধ্যমে চায়না ও বাংলাদেশের ব্যবসায় সম্পর্ক আরও সুদৃঢ হবে বলে জানান তারা।

এদিকে দেশীয় প্রতিষ্ঠান লুনা প্লাস্টিক ও পলিমার ইন্ড্রাটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এস এম কামাল উদ্দিন বলেন, ‘মেলা থেকে কোনো ধরনের পণ্য কেনা-বেচা করা হচ্ছে না। মেলায় গ্রাহকরা পণ্য পছন্দ করছে। তাদের চাহিদা অনুযায়ী অর্ডার দিলে কোম্পানি থেকে মাল সরবরাহ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই মেলার মাধ্যমে ক্রেতারা উৎপাদক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সহজে জানতে পারছে। তারা বুঝতে পারছে কোন প্রযুক্তি ভালো বা মন্দ। ভালো প্রযুক্তি গ্রহণ করছে আর খারাপটি ক্রেতারা বর্জন করছেন।’

উল্লেখ্য, চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক মেলা চলছে। আজ শনিবার মেলা শেষ হবে। বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিজিএমইএ) ও চ্যান চাও ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করে। মেলায় বাংলাদেশসহ ১৩টি দেশের ৩ শতাধিক প্লাস্টিক পণ্য প্যাকেজিং ও প্রিন্টিংসামগ্রী, যন্ত্রপাতি এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠান প্লাস্টিক মেলায় অংশ নিয়েছে।

সানবিডি/ঢাকা/আহো