সিরাজগঞ্জে বন্যায় বাড়ছে দুর্ভোগ, মিলছে না ত্রাণ
জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৯-০১ ১৩:০৬:২৪
ভারী বর্ষণ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অর্ধলাখেরও বেশি মানুষ, তলিয়ে গেছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোতে টিউবওয়েল ও টয়লেট ডুবে যাওয়ায় বেড়েছে স্বাস্থ্য ঝুঁকি। এভাবেই দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি।
এদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদফতরের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য জেলা শহর ও পাঁচটি উপজেলায় মজুদ রাখা হয়েছে ১৭৬ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে সাত লাখ নগদ টাকা। তবে এখনো কোথাও কোনো ত্রাণ বিতরণের খবর পাওয়া যায়নি। বন্যা কবলিতদের বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু রাস্তা বা স্কুল-মাদরাসার খোলা মাঠে থাকতে দেখা গেছে। তারা পাননি কোনো সহযোগিতা। তবুও জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা বলছেন, ত্রাণ দেওয়ার মতো কোনো অবস্থা সৃষ্টি হয়নি।
যমুনার পানি বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার বিষয়টি বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন।
এ ছাড়াও সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের গেজ মিটার (পানি পরিমাপক) আব্দুল লতিফ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।
গত ১৪ আগস্ট থেকে শুরু করে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জেলার নদী তীরবর্তী আরও কিছু নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। এ সকল এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি উঠায় বিপাকে পড়েছেন বন্যা দুর্গতরা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, গত কয়েকদিন যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় ৯ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অন্তত আরও দুদিন অব্যাহত থাকবে। তবে পানি বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত বন্যার তেমন কোনো ঝুঁকির পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম জানান, যমুনা নদীতে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও ত্রাণ দেওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। কারণ সমতল ভূমি অল্পতেই ডুবে যায় ও চরাঞ্চলের এই পরিস্থিতি সব সময়ের। আমরা নিয়মিত পানির খোঁজ-খবর রাখছি।
তিনি আরও বলেন, জেলার কাজীপুর, সদর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলায় ১০০ মেট্রিক টন চাল ও এক লাখ করে নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তারা সেটা তাদের চাহিদা অনুযায়ী যেকোনো সময় বিতরণ করবেন। এ ছাড়া জেলায় ৭৬ মেট্রিক টন চাল ও আড়াই লাখ টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। কোনো এলাকায় ত্রাণের প্রয়োজন আছে কি না তা নিয়মিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
সানবিডি/ এন/ আই