রুপির দরপতন থামাতে পারছে না পাকিস্তান

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৯-০৪ ১১:০৫:২৫


বর্তমানে এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের ১০০ টাকার জন্য এখন ১৯৮ পাকিস্তানি রুপি খরচ হচ্ছে। অথচ স্বাধীনতার পরপর চিত্রটা ছিল উল্টো। তখন পাকিস্তানের ১০০ রুপির মান ছিল বাংলাদেশের ১৬৫ টাকা।

বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে চলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের রুপির দরপতন অব্যাহত আছে। কমতে কমতে এখন ডলারের বিপরীতে দাম ১৬৯ রুপি ছুঁইছুঁই হয়ে গেছে। এর আগে কখনও দেশটির মুদ্রা এতটা মান হারায়নি।

গত চার মাসে রুপির দর কমেছে ১০.৫ শতাংশ।

পাকিস্তানের মুদ্রার মান এখন বাংলাদেশের মুদ্রার মানের প্রায় ৫০ শতাংশ। আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে বৃহস্পতিবার প্রতি ডলারের জন্য ৮৫ টাকা ২০ পয়সা গুনতে হয়েছে।

এ হিসাবে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের ১০০ টাকার জন্য এখন ১৯৮ পাকিস্তানি রুপি খরচ হচ্ছে। অথচ স্বাধীনতার পরপর চিত্রটা ছিল উল্টো। তখন পাকিস্তানের ১০০ রুপির মান ছিল বাংলাদেশের ১৬৫ টাকা।

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক আন্তব্যাংক লেনদেনে ডলারের দাম ১৬৭ রুপি ঠিক করে দিলেও স্থানীয় মুদ্রাবাজারে দাম আরও বেশি।

পাকিস্তানি মুদ্রা ডিলার, বিশেষজ্ঞ এবং বিশ্লেষকদের কাছে ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মূল্য হ্রাসের অনেকগুলো কারণ দেখছেন। কিন্তু স্থিতিশীলতা আনতে এই অবমূল্যায়ন বন্ধ করতে স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তান (এসবিপি) কোনো হস্তক্ষেপ করছে না বলে জানান তারা।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দ্রুত বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হোল্ডিং সর্বকালের উচ্চতায় পৌঁছার পরও কেন মে থেকে রুপির পতন ঘটছে ব্যাংকার ও মুদ্রা ডিলাররা এর কারণ বোঝার চেষ্টা করছিলেন।

আন্তব্যাংক বাজারের একজন মুদ্রা ব্যবসায়ী বলেন, ‘বাণিজ্য ঘাটতি বা আর্থিক বছরের উচ্চতর চলতি হিসাব ঘাটতির আশঙ্কা এর কারণ হতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেউই রুপির অবমূল্যায়নের সীমা নির্ণয় করতে পারে না। এটি বিপজ্জনক কারণ আমদানি পণ্যের উচ্চমূল্যের প্রবাহ মুদ্রাস্ফীতি সৃষ্টি করছে।’

স্থানীয় মুদ্রার সাম্প্রতিক খাড়া পতনের কারণে এসবিপি নীরব রয়েছে।

এসবিপির গভর্নর রেজা বাকির গত মাসে মুদ্রানীতি উপস্থাপনের সময় স্পষ্ট করে বলেছিলেন, চলতি হিসাবের ঘাটতি অর্থবছরের চেয়ে বেশি হবে। ঘাটতি ২ থেকে ৩ শতাংশের মধ্যে থাকবে। তিনি স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়নের সীমা বা বিনিময় হারের স্থিতিশীলতার বিন্দুও চিহ্নিত করেননি।

মে মাসে রুপির বিপরীতে ডলার সর্বনিম্ন স্পর্শ করেছিল যখন এটি ১৫১.১ রুপি। আগস্টে ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রাবাজারে বিনিময় হার দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ১৬৮.২ রুপি।

একজন স্থানীয় ব্যাংকার বলেন, ‘স্থানীয় মুদ্রার এই অবমূল্যায়নের সীমা কোথায় তা আমরা বিচার করতে পারছি না, কিন্তু এই অদ্ভুত বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা নিয়ে স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে।’

খোলা বাজারের মুদ্রা বিক্রেতারা তাদের বাজারে খুব কম ক্রেতা সত্ত্বেও এই অবমূল্যায়নের শেষ বিন্দু খুঁজে পায়নি।

খোলা বাজারে চাহিদা এখনও খুব কম। কিন্তু সেখানে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১৬৮.৮০ রুপিতে।

আগস্ট মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ১৩৩ শতাংশ বেড়ে ৪.০৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে যা আমদানিকারকদের কাছ থেকে ডলারের বেশি চাহিদার কারণে বিনিময় হারের ওপর চাপ বাড়ায়।

সানবিডি/ এন/আই