মেয়েকে লুকিয়ে রেখে অপহরণ মামলা, ৯ বছর পর উদ্ধার
জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৯-১৪ ২০:৪২:৩৭
প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে গিয়ে নিজ মেয়েকে লুকিয়ে রেখে অপহরণ মামলা দায়ের করেছিলেন মা। তবে মামলার ৯ বছর পর লুকিয়ে রাখা জফুরা খাতুনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগী ওই তরুণী নাম পরিবর্তন করে ঢাকার একটি গার্মেন্টে চাকরি করতেন।
মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাকে উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলী। এর আগে, সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকার কদমতলী থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানায় নিয়ে আসে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১২ বছর পূর্বে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে ফুল মিয়ার সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে হারুন মিয়ার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কিন্তু ফুল মিয়ার স্ত্রী আমিনা খাতুন হারুন মিয়ার লোকজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দুই তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হলে হারুন মিয়াকে ঘায়েল করতে ২০১২ সালের ৯ নভেম্বর আমিনা খাতুন তার কিশোরী মেয়ে জফুরা খাতুনকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। আব্দুর রশিদ, ছুরুক মিয়া, আব্বাছ মিয়া ও হারুন মিয়াকে মামলায় আসামি করা হয়। মামলাটিও দুইবার তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। পরবর্তী সময়ে জুডিশিয়াল ইনকোয়ারিতে অভিযোগটি আমলে নেন বিচারক। পরে এই মামলায় আব্দুর রশিদ ও ছুরুক মিয়া দীর্ঘ কারাভোগের পর হাইকোর্ট থেকে এবং আব্বাস মিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন লাভ করে। হারুন মিয়া আত্মসমর্পণ করেননি।
এই ঘটনায় দীর্ঘদিন পর জানা যায়, জফুরা খাতুন ফাতেমা নাম ধারণ করে ঢাকার কদমতলীর এএসটি অ্যাপারেল নামক গার্মেন্টে চাকরি করছেন। পরে হবিগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সনত চন্দ্র দাস ঢাকার পুলিশের সহায়তায় তাকে থানায় নিয়ে আসেন।
এ অপহরণ মামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হারুন মিয়া বলেন, ‘একটি মহলের প্ররোচনায় ফুল মিয়ার স্ত্রী প্রথমে মিথ্যা ধর্ষণচেষ্টা ও পরে অপহরণ মামলা দায়ের করেন। এই মামলায় আমাদের লোকজনকে জেলে যেতে হয়েছে। কিন্তু সত্য উদঘাটন হওয়ায় আমরা আনন্দিত। আমরা এই মিথ্যা মামলা দায়েরের মাধ্যমে হয়রানির বিচার চাই।’
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলী জানান, ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
এএ