আঙুলের অস্ত্রোপচার করাতে গিয়ে জুডো খেলোয়াড়ের মৃত্যু

স্পোর্টস ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৯-২৫ ১১:২৪:৪০


আঙুলের অস্ত্রোপচার করাতে গিয়ে না-ফেরার দেশে চলে গেলেন সোনাজয়ী জুডোকা প্রিয়াংকা আক্তার।

রাজধানীর গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শুক্রবার দুপুর ২টায় মারা যান তিনি।

তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে কোচ আবু বকর বলেন, ‘প্রিয়াংকার হাতের তিনটি আঙুলে সমস্যা ছিল। অকালে চলে গেল মেয়েটি।’

এদিকে প্রিয়াংকার স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসকের অবহেলায় মারা গেছেন তিনি।

শুক্রবার রাত পৌনে ২টার দিকে কলাবাগান থানার ডিউটি অফিসার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আলী গণমাধ্যমকে বলেন, প্রিয়াংকা আক্তারের স্বজনরা থানায় এসেছেন। চিকিৎসকের অবহেলায় প্রিয়াংকা আক্তার মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) সাবেক ফুটবলার শরিফ হোসেনের সঙ্গে প্রিয়াংকার সঙ্গে তার বিয়ের কথা চূড়ান্ত হয়েছিল।

তারও দাবি, চিকিৎসকের ভুলেই প্রিয়াংকার মৃত্যু হয়েছে।

শরিফ হোসেন বলেন, ‘বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙুলের নার্ভে সমস্যার কারণে আমি প্রিয়াংকাকে বছর খানেক আগে এই হাসপাতালের চিকিৎসক কেকে কৈরির কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম। তিনি দেখে অপারেশনের পরামর্শ দিয়েছিলেন। ৩ মাস আগে আবারও চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে অপারেশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিই। অপারেশনের জন্য বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ভর্তি করা হয়।

শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ডা. কেকে কৈরি ও তার ছেলে তন্বয় কৈরি অপারেশন করেন। দীর্ঘ সময় প্রিয়াংকাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের না করায় আমরা চিন্তিত হয়ে পড়ি। জ্ঞান ফিরছে না কেন— বারবার জিজ্ঞাসা করলেও কোনো সদুত্তর পাইনি। অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগে সমস্যা হচ্ছিল, তারা এমন বলাবলি করছিল। এরপর ওর মরদেহ বের করে দেয়।’

প্রিয়াংকার বাড়ি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা গ্রামে। ২০১২ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বিকেএসপিতে পড়া অবস্থায় জুডোতে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছিল প্রিয়াংকা। সর্বশেষ সে জুডো দলের খেলোয়ার হিসেবে বাংলাদেশ আনসার বিভাগে যুক্ত ছিল।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মো. ইকরাম হোসেন বলেন, অপারেশনটি করেন বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য চিকিৎসক ডা. আর আর কৈরী। তিনি দেশের একাধারে জনপ্রিয় ও অভিজ্ঞ চিকিৎসক। হাতের আঙুলের ছোট্ট একটি অপারেশন ছিল। এ অপারেশন করার আগে রোগীর ফিটনেসসহ যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। অপারেশনের আধাঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা পরে রোগীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়। এখনও তিনি হাসপাতালে বসে আছেন ও অনুতপ্ত বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক জানিয়েছেন- এক হাজার রোগীর মধ্যে একজন রোগীর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হতেই পারে। তবে রোগীকে বাঁচাতে আমাদের চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েছিলেন কিন্তু হায়াতের মালিক তো আল্লাহ্‌।

সানবিডি/ এন/আই