ব্যাংক লোন পাচ্ছে না আইটিখাত

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-১০-২০ ১১:২৭:১৯


তথ্যপ্রযুক্তি খাতে পাঁচ বিলিয়ন বা ৫শ কোটি মার্কিন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে সরকার। এজন্য স্কুল-কলেজে আইটি ল্যাব স্থাপন থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নির্মাণ হচ্ছে হাইটেক পার্ক। যদিও ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করছেন নানা প্রতিকূলতা নিয়ে। ব্যাংক লোন পাচ্ছে না আইটিখাত। অনলাইনে টাকা লেনদেনের সুরক্ষিত মাধ্যম পেপল আসেনি এখনো। আছে দক্ষ জনবলের অভাব।

সংশ্লিষ্টরা দেশে নির্মাণাধীন হাইটেক বা সফটওয়্যার পার্কগুলোর কাজ দ্রুত শেষ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ইন্টারনেটের ধীরগতিকে রপ্তানি আয়ের বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করছেন অনেকে।

তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের ঘোষণা ছিল। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ঘোষিত সে নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ক্ষমতায় এসে সরকার দেশের বিভিন্ন হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, আইটি সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। এছাড়া কম্পিউটার ল্যাব প্রতিষ্ঠা শুরু করে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে শিল্প হিসেবে প্রযুক্তিকে কীভাবে গড়ে তোলা যায়, তারও একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয় সরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আইসিটি খাতে ১২ বছর আগে রপ্তানি আয় ছিল মাত্র ২৬ মিলিয়ন ডলার। আর এখন নীতিগত সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের ফলে আইসিটি শিল্প থেকে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করছে সরকার। এক্ষেত্রে সরকারের লক্ষ্য, ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়।

‘২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত হওয়ার পর ২০০৯ সালে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্ব, পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে ধাপে ধাপে মানবসম্পদ উন্নয়নে ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থা প্রণয়নে কাজ শুরু হয়। এর মাত্র ১২ বছরের মধ্যে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটিতে উন্নীত করতে পেরেছি আমরা।’

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কলসেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশীয় বিপিও শিল্পের বাজার প্রায় ৬শ মিলিয়ন ডলার, যা ২০২৫ সালের মধ্যে এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে এক বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এজন্য আন্তর্জাতিক বাজার বাড়াতে হবে। ট্রেনিং বাড়াতে হবে। আমাদের এ সেক্টরে কোনো প্রণোদনার ব্যবস্থা হয়নি। আমরা কিন্তু মাল্টিপল ব্যবসায়ী না। অনেক ব্যবসায়ী লোন নিয়ে আরেক ক্ষেত্রে ব্যবহার করে। আমরা তো তা করতে পারবো না। লোন নেওয়ার আগে সেটা পরিশোধের কথা চিন্তা করতে হবে। সরকার আমাদের সেক্টরে এক বছরের জন্য কারেন্ট বিল ও ভাড়া মওকুফ করলে খুব ভালো হতো।

আইটি শিল্পের সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার সরকারের নানা উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে দেশে সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদকে ফাইবার অপটিক ব্রডব্যান্ড কানেক্টিভিটির আওতায় আনা হবে। বর্তমান সরকারের প্রযুক্তিবান্ধব নীতির ফলে দেশে স্যামসাং, অপো, নোকিয়াসহ ১৪টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল সেট উৎপাদন করছে। ফলে আমাদের মোবাইল সেট আমদানির প্রয়োজনীয়তা কমছে।

বরং আমরা এ পণ্যটি রপ্তানি করতে পারবো। সেখান থেকেও বৈদেশিক অর্থ উপার্জন হবে। এছাড়া ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের জন্য দ্রুত কাজ করছে সরকার। গাজীপুরের চন্দ্রায় বেসরকারি উদ্যোগে দেশের প্রথম কম্পিউটার হার্ডওয়্যার উৎপাদন কারখানা স্থাপন হয়েছে। এ খাতে দক্ষ জনবল বাড়াতেও কাজ করছে সরকার।

সানবিডি/ এন/আই