একমির নিলামে ৫ গুণ প্রস্তাব
প্রকাশ: ২০১৬-০২-০৪ ১০:২০:০৪
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রিতে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড। নিলামে তাদের জন্য সংরক্ষিত শেয়ারের প্রায় পাঁচগুণ শেয়ার কেনার জন্য প্রস্তাব জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৪৮৭ শতাংশ শেয়ারের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে সর্বোচ্চ দর।নিলামে ৮৫ টাকা ২০ পয়সা দরে নয় কোটি ৭৪ লাখ ৪২ হাজার শেয়ার কেনার জন্য দর প্রস্তাব করেছে ১৭৮টি ‘যোগ্য’ বিনিয়োগকারী, যাদের মধ্যে রয়েছে স্টক ডিলার, মার্চেন্ট ব্যাংক, মিউচুয়াল ফান্ড।সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
একমি ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে পাঁচ কোটি শেয়ার বিক্রি করছে।এই শেয়ারের ৪০ শতাংশ তথা দুই কোটি শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের জন্য সংরক্ষিত।তাদের কাছে শেয়ার বিক্রির জন্য সোমবার বেলা সাড়ে ৩টায় নিলাম শুরু হয়, শেষ হয় বুধবার বেলা সাড়ে ৩টায়।
নিলামে মোট ১০ কোটি ১৬ লাখ ১৩ হাজার ৮০০ শেয়ারের দর বিভিন্ন হারে দর প্রস্তাব করে ১৯৩টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৮৫ টাকা ২০ পয়সা দরে নয় কোটি ৭৪ লাখ ৪২ হাজার শেয়ার কেনার জন্য দর প্রস্তাব করা হয়। এর মূল্য দাঁড়ায় ৮৩০ কোটি ২১ লাখ টাকা।
বিধি অনুসারে, নিলামে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান শেয়ারের নির্দেশক মূল্য (Indicative Price) থেকে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বেশি বা ২০ শতাংশ কম পর্যন্ত দর প্রস্তাব করতে পারে। একমি ল্যাবরেটরিজের শেয়ারের নির্দেশক মূল্য ৭১ টাকা। এ হিসেবে এর সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য দর দাঁড়ায় ৮৫ টাকা ২০ পয়সা। আর সর্বনিম্ন দর হয় ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা।
নিলাম শেষে দেখা যায়, সর্বনিম্ন সীমা ৫৬ টাকা ৮০ পয়সা দরে একমির শেয়ার কেনার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব করেনি। তবে এর কাছাকাছি দাম ৫৭ টাকা দরে দুই লাখ শেয়ার কেনার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব করেছে।
এছাড়া ৮৫ টাকা দরে দুই হাজার শেয়ার কেনার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান, ৮৪ টাকা দরে এক হাজার, ৮৩ টাকা দরে এক হাজার নয়শ, ৮২ টাকা দরে এক হাজার, ৮০ টাকা ৯০ পয়সা দরে ৫০ হাজার, ৭৫ টাকা দরে পাঁচ হাজার একশ, ৬০ টাকা দরে ৫০ হাজার শেয়ার কেনার জন্য একটি করে প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব জমা দিয়েছে। অন্যদিকে ৮০ টাকা দরে ২০ লাখ ৩৫ হাজার শেয়ার কেনার জন্য ৪টি প্রতিষ্ঠান এবং ৭১ টাকা দরে মোট ছয় লাখ ২৫ হাজার শেয়ার কেনার জন্য ২টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব করেছে।
নির্দিষ্ট সংখ্যার চেয়ে বেশি শেয়ার কেনার জন্য প্রস্তাব জমা পড়ায় আনুপাতিক হারে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শেয়ার বরাদ্দ করা হবে। এই শেয়ারের উপর চার মাসের লকইন থাকবে। অর্থাৎ শেয়ার বরাদ্দ পাওয়ার পরবর্তী চার মাসের মধ্যে ওই শেয়ার বিক্রি, হস্তান্তর বা উপহার দেওয়া যাবে না।
সব শেয়ার ৮৫ টাকা ২০ পয়সা দরে বিক্রি হয়ে যাওয়ায় এটি হচ্ছে আইপিওর কাটিং প্রাইস। এ দরে কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব করবে। তবে কোম্পানি চাইলে এর চেয়ে কম দামেও শেয়ার বিক্রির প্রস্তাব দিতে পারবে।
নিলামে বিপুল সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে সন্তুষ্ট একমি ল্যাবরেটরিজের ইস্যু ম্যানেজার আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সাড়া পাওয়া গেছে। এটি খুবই ভালো লাগার বিষয়।
এদিকে নিলামে অংশ নেওয়া একাধিক প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহী অর্থসূচককে বলেছেন, তারা মনে করেন দেশের ওষুধ শিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে মেধাসত্ত্ব আইন পরিপালনের বাধ্যবাধকতা থেকে দীর্ঘদিনের জন্য অব্যহতি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) কাছ থেকে ওষুধ রফতানির জন্য স্থানীয় দুটি কোম্পানির অনুমতি পাওয়ার ঘটনা এ শিল্পের সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেক দিন পর ওষুধ শিল্পের একটি ভালো কোম্পানি বাজারে আসায় তারা তাতে বিড করেছেন। এমন একটি কোম্পানিকে বাজারে আসার পথ করে দেওয়ায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তারা।