বাংলাদেশ-ভারত অমীমাংসিত বিষয় নিষ্পন্ন করার তাগিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-১২-০৬ ২১:৪১:২১


চ্যালেঞ্জকে সুযোগে রূপান্তরিত করার জন্য বাংলাদেশ ও ভারতকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এজন্য অমীমাংসিত বিষয়গুলো দ্রুত নিষ্পত্তির মাধ্যমে দুই দেশের মঙ্গল নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল ভারত। স্বীকৃতি প্রদানকারী প্রথম দেশটি হচ্ছে ভুটান।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সোনালি অধ্যায় ছিল বঙ্গবন্ধুর সময় এবং সেটিকে আরও বেশি এগিয়ে নিয়ে গেছেন যখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসেন।’

তিনি বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক একটি নতুন উচ্চতায় পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমলে।’

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক এই অঞ্চলের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মিলিত উন্নতি দুই দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করবে বলে তিনি জানান।

বিশ্বাস, সম্মান ও সমতার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দেশ বিভিন্ন বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করেছে।’

স্থল সীমানা নির্ধারণ, সমুদ্র সীমানা নির্ধারণ, গঙ্গা পানি চুক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিষয় সম্পন্ন হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তিস্তাসহ আরও কিছু বিষয় এখনও অনিষ্পন্ন রয়েছে, যেগুলো আমি আশা করি, সদিচ্ছার ভিত্তিতে আমরা নিষ্পন্ন করতে পারবো।’

ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য বাংলাদেশ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে জানিয়ে স্পিকার বলেন, ‘গত ২১ নভেম্বর ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও তিন বাহিনীর প্রধান বাংলাদেশ দূতাবাসে এক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন।’

স্পিকার আরও বলেন, ‘১৯৭২ সালের ২৫ মার্চের মধ্যে প্রায় এক কোটি শরণার্থী তাদের স্বাধীন দেশে ফিরেছিল। মুক্তিবাহিনীকে সমর্থনকারী ভারতীয় বাহিনীকে স্বাধীনতার তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছিল, এটিও প্রকৃতপক্ষে একটি অভূতপূর্ব ঘটনা।’

শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আগামী ৫০ বছরে আমাদের বন্ধুত্বের ভিত্তি এবং আমাদের ইতিহাসকে একসঙ্গে গড়ে তোলার জন্য আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। আমাদের এখন নিশ্চিত করতে হবে যে, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই ইতিহাস যেন বুঝতে পারে।’ কারণ আজকের তরুণরাই এই অংশীদারিত্বকে অপরিবর্তনীয় করে তুলতে পারবে বলে তিনি জানান।

যৌথভাবে ১৮টি দেশে মৈত্রী দিবস উদযাপন করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম দুবাই সোয়ামি বলেন,‘অন্য কোনও দেশের সঙ্গে যৌথভাবে এই ধরনের মাইলফলক উদযাপনের চেষ্টা আগে কোনও দেশ করেনি।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক মানচিত্র বদলে দিয়েছে। এটি আমাদের আদর্শিক মানচিত্রকেও বদলে দিয়েছে।’

মুক্তিযুদ্ধ এবং বাংলাদেশকে পাকিস্তানি নিপীড়ন থেকে মুক্ত করার জন্য আমাদের শক্তিশালী বন্ধুত্ব ও অংশীদারিত্বের অনেক উপাদান ছিল, যা ১৬ ডিসেম্বরের বিজয় নিশ্চিত করেছিল। এর মধ্যে ছিল কূটনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের সমন্বয়, যেসব এলাকায় আঘাতপ্রাপ্ত বাংলাদেশি নাগরিকরা আশ্রয় নিয়েছেন, সেখানে অভ্যন্তরীণ সামাজিক স্থিতিশীলতার ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং কৌশলগত সামরিক সহযোগিতা করা হয়।

আমাদের অংশীদারিত্ব এরপরেও অনেক এগিয়ে গেছে বলে তিনি জানান।

এএ