এক্সচেঞ্জ হাউজকে ডলারের রেট নির্দিষ্ট করার সুপারিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০১-১২ ২২:১০:৩৫
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে ভিন্ন ভিন্ন রেটে (হারে) সংগ্রহ করতে হয় ব্যাংকগুলোকে। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ব্যাংক। তাই রেমিট্যান্স সংগ্রহে ডলারের রেট নির্দিষ্ট করার সুপারিশ করেছে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)।
বু্ধবার (১২ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ সুপারিশ করেন এবিবির নতুন কমিটির সদস্যরা।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো থেকে ব্যাংকগুলোকে ভিন্ন ভিন্ন রেটে (হারে) রেমিট্যান্স সংগ্রহ করতে হয়। ব্যাংকভেদে প্রতি মার্কিন ডলার ৮৬ থেকে ৮৮ টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে রেমিট্যান্স সংগ্রহ করে থাকে। ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ব্যাংক। ডলারের দাম বাড়লে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয়। এ সমস্যা সমাধানে রেমিট্যান্স সংগ্রহে টাকার হার নির্দিষ্ট করার সুপারিশ করা হয় এবিবির পক্ষ থেকে।
উত্তরে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, এবিবি ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) বসে একটি সমঝোতা করা উচিত। সবার পরামর্শক্রমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে পাশে থাকবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এ সময় বৈধ পথে দেশে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে বর্ধিত প্রণোদনা ঘোষণা খবর প্রতিটি শাখায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেন গভর্নর।
প্রবাসীদের রেমিট্যান্স বৈধ উপায়ে দেশে পাঠানোকে উৎসাহিত করতে বিদ্যমান ২ শতাংশ প্রণোদনা আরও বাড়িয়ে আড়াই শতাংশ করেছে সরকার। ২০১৯-২০ অর্থ বছরে প্রথমবারের মতো রেমিট্যান্সের বিপরীতে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা বা নগদ সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। এ সিদ্ধান্তের কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বেড়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাঁড়ায় ১৮.২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা তার আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ বেশি।
এ ছাড়া, ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স আহরণের পরিমাণ ছিল ২৪.৮০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৯-২০ অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৩৬ শতাংশ বেশি। এছাড়াও ইডিএফ ফান্ড থেকে ঋণ বিতরণ প্রক্রিয়া জোরদারের বিষয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসে অর্থনৈতিক ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংকের এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল বা ইডিএফ) থেকে ঋণ নেওয়ার সময়সীমা ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে। এ ফান্ড থেকে ২০২১ সালের ৩১ জুন পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারবে ব্যাংকগুলো। ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে।
এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে ইডিএফ ফান্ডের আকার ও সুদহারে পরিবর্তন এনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৭ এপ্রিল প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী ইডিএফের আকার ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা হয়। পাশাপাশি কমানো হয়েছে সুদের হার। পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ইডিএফের ঋণের বিপরীতে লাইবর +১ শতাংশ সুদ রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি আমদানি-রফতানির সঙ্গে যুক্ত ব্যাংকের এডি শাখাগুলো গ্রাহক পর্যায় থেকে ২ শতাংশ মুনাফা করতে পারবে।
এএ