আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ পৌনে ১২ হাজার কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০২-১৩ ১৭:০১:৫৮
দেশের ব্যাংগুলোতে খেলাপি ঋণ নিয়ে অস্থিরতা চলছে। এর বাইরে নেই ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোও (এনবিএফআই)। আর্থিক খাতে ক্যানসারের মতো বাড়তে থাকা খেলাপি ঋণ ক্ষতিগ্রস্ত করছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে। এনবিএফআইগুলোয় খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে পৌনে ১২ হাজার কোটি টাকা।
বর্তমানে দেশে বিদ্যমান ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ মোট বিতরণকৃত ঋণের ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত হালনাগাদ তথ্যে এ বিষয়ে জানা গেছে। ব্যাংক খাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, কঠোর নজরদারি না থাকায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের টাকা নিয়ে প্রতারণার সুযোগ পাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, দেশে কার্যরত সব ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১১ হাজার ৭৫৭ কোটি ৭ লাখ টাকা। যার গড় ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিতরণকৃত মোট ঋণের পরিমাণ ৬৬ হাজার ৭৩৯ কোটি ২১ লাখ টাকা।
সূত্রমতে, গেল ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ২৪৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। যা ছিল মোট বিতরণকৃত ঋণের ১৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ পরিমাণ ২০২১-এর সেপ্টেম্বরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৭৫৭ কোটি টাকা বেড়ে হয়েছে ১৭ দশমিক ৬২ শতাংশ।
বর্তমানে ৩৪টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৯টি প্রতিষ্ঠানের ১০০ কোটি টাকারও বেশি ঋণ খেলাপি হয়েছে। বাকি ১৫টি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ রয়েছে ১০০ কোটি টাকার নিচে।
অব্যাহতভাবে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নজরদারি বাড়ানোর দাবি বিশেষজ্ঞদের। খেলাপি ঋণ বাড়তে থাকায় উদ্বেগ জানিয়ে সাবেক গর্ভনর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এসব প্রতিষ্ঠানের জন্মলগ্ন থেকেই দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক ধারা অনুযায়ী সম্পূর্ণ রাজনৈতিকভাবে নতুন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন না থাকা সত্ত্বেও এসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন দেওয়ায় আর্থিক খাতে অনিয়মের জন্য কিছুটা হলেও দায়ী।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাংকগুলোকে যেভাবে নজরদারি করা হয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেভাবে নজরদারি করা হয়নি। সেই সুযোগে জনগণের টাকা নিয়ে তা আত্মসাৎ করায় বর্তমান পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে। সঠিক সুপারভিশন করা হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের বোঝা কমানো সম্ভব হতো।’
সানবিডি/এনজে