জিল্লুর হত্যা মামলা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনের যাবজ্জীবন
জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২২-০২-১৫ ১৪:৫৪:৪৯
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় আলোচিত জিল্লুর রহমান ভান্ডারী হত্যা মামলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড এবং ছয় জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এ ছাড়া রায়ে খালাস দেয়া হয়েছে পাঁচ জনকে।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক শেখ ছামিদুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (অতিরিক্ত পিপি) লোকমান হোসেন রায়ের নিশ্চিত করেছেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া দুই আসামি হলেন সাইদুল ইসলাম খোকন ও ইসমাইল হোসেন প্রকাশ পিস্তল ইসমাইল।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্তরা হলেন আবু ওরফে ধামা আবু, কামাল, নাসির, তোতা মিয়া, সুমন ওরফে সিএনজি সুমন ও জসীম।
খালাসপ্রাপ্ত পাঁচ জন হলেন সাইফুল, নাজিম, আজিম, রঞ্জন ও জাহাঙ্গীর।
রায় ঘোষণার সময় সাইফুল, আজিম ও নাজিম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সাইদুল ইসলাম কারাগারে রয়েছেন। বাকিরা পলাতক।
পিপি লোকমান হোসেন বলেন, ‘মামলার রায়ে ১৩ আসামির মধ্যে দুই জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ছয় জনের যাবজ্জীবন ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। এ ছাড়া বাকি পাঁচ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দণ্ডপ্রাপ্তরা রাঙ্গুনিয়ার একটি সন্ত্রাসী গ্যাং। এরা একই আদালতে আরও একাধিক মামলায় যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত।’
মামলার বরাতে তিনি জানান, ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে জিল্লুর রহমান ভান্ডারীকে রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট সিএনজি স্টেশন থেকে তুলে নিয়ে রানীরহাট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন নিহতের ছোট ভাই মোহাম্মদ আজিম উদ্দিন রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
২০১৬ সালের ৭ অক্টোবর তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় সিআইডি। এরপর ২০১৯ সালের ২৮ মে ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। পরবর্তীতে ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য্য করা হয়।
রায় ঘোষণার দিন কয়েক দফায় পিছিয়ে সর্বশেষ মঙ্গলবার বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত।
পিপি বলেন, ‘নিহত জিল্লুর রহমানের শত্রুতা ছিল মূলত ইসমাইলের সঙ্গে। জিল্লুর ছোটভাই বাবলুকে আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে বিদেশ নেন ইসমাইলের প্রবাসী ভাই। এই টাকাটা ইসমাইলের মাধ্যমেই দেয়া হয়। কিন্তু বিদেশ যাওয়ার পর বাবলু জানতে পারেন ভিসার সব কাগজপত্র ভুয়া।
‘এতে যেকোনো সময় ওই দেশের পুলিশ তাকে আটক করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে পারে- এমন আশংকার কথা জিল্লুরকে জানান বাবলু। এতে জিল্লুর দেশে ইসমাইলকে টাকা ফেরত দেয়ার জন্য চাপ দিলে তাদের মধ্যে শত্রুতা তৈরি হয়। সেই শত্রুতা থেকেই তাকে খুন করা হয়।’