ধু-ধু বালুচরে কুমড়া চাষ, লাভবান হচ্ছেন চরের কৃষক

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২২-০২-১৭ ২১:০৮:২১


কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমার, ফুলকুমার ও গঙ্গাধরসহ ১৬ নদ-নদীর বুক জুড়ে এখন শুধুই বিস্তৃত বালুচর। এসব বালুচরে তেমন কোনো ফসল ফলানো যায় না। কিন্তু এবার করোনাকালে এসব চরের ভূমিহীন কৃষকরা অব্যবহৃত বালুচরকে ব্যবহার উপযোগী করে তুলেছেন। ফলাচ্ছেন ফসল। বালুমাটিতে বিপুল পরিমাণ কুমড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছেন তারা।

বালুচরে কুমড়া চাষ করতে ভূমিহীন কৃষকদের কারিগরি বিভিন্ন বিষয় ও বীজ দিয়ে সহায়তা করছে কৃষিবিভাগসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা। তবে অধিকাংশ কৃষক নিজ উদ্যোগে এখানে কুমড়া চাষ করছেন।

কুড়িগ্রামের কৃষিসম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ করা হয়েছে। এসব জমির বেশিরভাগই বালুচর।

নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমার নদীর চরের কৃষক সাফিয়ার রহমান জানান, গত ৩ বছর নিজ উদ্যোগে বালুচরে কুমড়া চাষ করে পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে তিনি প্রতি বছর কুমড়া বিক্রি করে ২০-২৫ হাজার টাকা আয় করছেন।

তিনি বলেন, আমি নিজে পরিশ্রম করে বালুচরে কুমড়া চাষ করছি। সঠিকভাবে যত্ন নিলে বালুচরে খুবই ভালো কুমড়া চাষ করা যায়।

কুড়িগ্রাম সদর উপজলোর ব্রহ্মপুত্র নদের ঝুনকার চরের ভূমিহীন কৃষক নবিদুল ইসলাম বলেন, চরের বসবাসকারী ১৫ জন ভূমিহীন কৃষক একত্রিত হয়ে ৭ হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ করছেন। আশা করছি আল্লাহর রহমতে প্রত্যেক কৃষক এবছর কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা করে লাভ পাবেন। আমরা একটি এনজিও থেকে বীজ সহায়তা পেয়েছি। কৃষিবিভাগ থেকে নিয়মিত সহায়তা পাচ্ছি।

চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে অষ্টমীর চর এলাকার ভূমিহীন কৃষক শেখের আলী বলেন, বালুচরে কুমড়া চাষ করে ভালোই লাভবান হচ্ছি। ওই চরের বসবাসকারী অনেক কৃষক এখন কুমড়া চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বালুচরে কুমড়ার চাষে ফলন ভালোই পাওয়া যায়।

একই চরের বিধবা ছমিরন বেওয়া জানান, গত বছর দুই বিঘা জমিতে কুমড়া চাষ করে ভালোই লাভবান হয়েছি। তাই এবার ৩ বিঘা জমিতে কুমড়া লাগিয়েছি।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক মঞ্জুরুল হক বলেন, চরের কৃষকরা ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু করে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত কুমড়া চারা লাগান। মার্চ মাস হতেই তারা ফলন পেতে শুরু করেন। এসব চরের উৎপাদিত কুমড়া দেশের বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এসে কিনে নিয়ে যান। বালুচরের ভূমিহীন এই কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

এএ