রোজার আগেই হুমকিতে সৌদির মধ্যবিত্তরা

প্রকাশ: ২০১৬-০২-১৫ ১৫:৩৫:২৭


price-hikeসৌদি আরবে জ্বালানি ও অন্যান্য সেবার দাম বৃদ্ধির প্রভাবকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা সতর্ক করে বলছেন, আগামী ৬ মাসের মধ্যেই এর প্রভাব দেখা যাবে। এতে মধ্যম আয়ের লোকজনই সবচেয়ে বেশি ‘হুমকির মুখে’ পড়বে।রোববার স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমে এ খবর প্রকাশ করা হয়।

অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি সৌদি পরিবারের জন্য সবচেয়ে প্রতিকূল হতে পারে। বিশেষ করে রমজানের মতো উৎসবমূখর মাসে এর খারাপ প্রভাবটা আরও বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এজন্য স্থানীয়দের ব্যয়ের ধরন পাল্টানোর আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।

সৌদি সরকারের মোট বাজেটের প্রায় ৭৫ শতাংশ আসে তেল থেকে। কিন্তু গত দেড় বছরে বিশ্ব বাজারে তেলের দর এক তৃতীয়াংশ কমে যায়। এতে ২০১৫ সালে বিপুল বাজেট ঘাটতির মুখে পড়ে দেশটি। অনেকেই মনে করেন, দেশটি অর্থনৈতিক বোমার মুখে পড়তে যাচ্ছে। এদিকে সরকারও এ অবস্থার উত্তোরণে ভাতা কমিয়ে দিয়ে অর্থনৈতিক ভার চাপিয়ে দিচ্ছে নাগরিকদের ওপর। চলতি বছরের শুরুতেই গ্যাস-পানিসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়াতে শুরু করে সরকার।

আব্দুলওহাব মুহাম্মদ নামের এক প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানান, জ্বালানিসহ বেশ কিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধি সৌদিদের জীবনযাত্রার সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। পরিবারের বাজেটের ওপর ইতোমধ্যেই তার প্রভাব পড়েছে। “বর্তমানে পণ্যের দাম অনেক গুণ বেড়েছে। রমজান মাসেই এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে পারে। কারণ, এ সময়টাতেই সৌদিদের খরচ অতিরিক্ত বেড়ে যায়।”

অর্থনীতিবিদদের উদ্বৃতির বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, সৌদি আরবের জনগণের বড় একটি অংশকে প্রভাবিত করার আগেই তেলের ‘অর্থনৈতিক ধাক্কা’ দেশটির নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এটা এখন মধ্যম আয়ের মানুষের ব্যয়ের ওপরও প্রভাব ফেলবে। কারণ, তাদের ব্যয়ের সঙ্গে এখন আর আয়ের সামঞ্জস্যতা হবে না।

প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে সিএনএনের এখ খবরে দেশটির ভর্তুকি চিত্র তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়-

• গ্যাসে মোটা অংকের ভর্তুকি পায় এ দেশের মানুষ। মাত্র ১৬ সেন্টে এক লিটার গ্যাস পায় সৌদির নাগরিকরা। বর্তমানে তা নেওয়া হচ্ছে ২৪ সেন্ট।
• ফ্রি স্বাস্থ্য সুবিধা
• পানি ও বিদ্যুতে ভর্তুকি
• কোনো আয়কর দিতে হয় না
• চাকরি শেষে সরকারি পেনশনের সুযোগ
• প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ সরকারি চাকরিজীবী
• বেসরকারি চাকরির চেয়ে সরকারি চাকরিতে বেতন বেশি
• বেকার ভাতার ব্যবস্থা
• ব্যবসা শুরু ও আবাসন কেনার জন্য সুদমুক্ত ঋণের ব্যবস্থা

সিএনএন জানায়, এসব সুবিধা দিয়ে থাকে সৌদি। কিন্তু বর্তমানে অর্থনৈতিক চাপে পড়েছে দেশটি। গত বছরে ১০ হাজার কোটি ডলারের ঘাটতি বাজেটে ভুগেছে সৌদি আরব। যদি অবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন না হয়, তবে এ বছরও বিপুল অংকের ঘাটতি বাজেটে দেশটি ভুগতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফ সম্প্রতি দেশটির জন্য এক হতাশার বানী শুনিয়েছে। তাদের আশঙ্কা, তেলের দাম যদি ৫০ ডলারের কাছাকাছি না অবস্থান করে, তবে আগামী ৫ বছরের মধ্যে সৌদি আরবের অর্থনীতি ধসে পড়তে পারে।

সানবিডি/ঢাকা/আহো