তলদেশ ফুঁড়ে আলোর মুখ দেখেছে স্বপ্নের কর্ণফুলী টানেল

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০৪-০৩ ১৮:৪৯:১৪


প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধকার তালিকায় থাকা মেগা প্রকল্পগুলোর অন্যতম প্রকল্প সুড়ঙ্গপথ বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল। এই টানেল তলদেশ ফুঁঁড়ে এরই মধ্যে আলোর মুখ দেখেছে। সম্প্রতি খুলে দেওয়া হয়েছে টানেলের উভয় চ্যানেল। সড়ক প্রস্তুতের কাজও শেষ পর্যায়ে। এ কাজ সম্পন্ন হলে শুরু হবে যানবাহন চলাচল।

এদিকে নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা প্রান্তে ৪০৭ কোটি টাকায় প্রস্তুত হচ্ছে সাড়ে ১০ কিলোমিটার টানেল সংযোগ সড়ক। সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করতে তাগিদ অনুভব করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। টানেলের আগেই ৬ লেনের এ সড়কের কাজ সম্পন্ন করতে চায় সওজ। সড়কটি দৈর্ঘ্যে খুব বেশি না হলেও এটিই হবে বিশাল এই অর্থনৈতিক অঞ্চলের মূল নেটওয়ার্ক, যা বাস্তবায়নের পর পাল্টে যাবে দক্ষিণ চট্টগ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা।

পাশাপাশি টানেলের সংযোগ সড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করতে কর্ণফুলীর শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারা কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার ৬ লেন সড়কের কাজও চলছে দ্রুতগতিতে। সড়কের দুপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বালি ভরাটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সড়ক নির্মাণের সঙ্গে কালভার্ট নির্মাণের কাজও চলছে সমানতালে। এই ৬ লেনের জন্য ক্রসিং থেকে আসা ও বাঁশখালী সড়কের সঙ্গে সমন্বয় করতে মধ্যখানে সড়কের জায়গা কম থাকায় নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে। এজন্য পাঁচটি মৌজা থেকে ৭ দশমিক ৮৩ একর ভূমি অধিগ্রহণ করতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। টানেলের সঙ্গে সঙ্গে সড়ক নির্মাণের কাজও শেষ হবে বলে জানিয়েছে সওজ।

এ বিষয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে আনোয়ারা সদর এবং সেখান থেকে কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সড়কের মোট দৈর্ঘ্য হবে সাড়ে ১১ কিলোমিটার। বিদ্যমান সড়ক সম্প্রসারিত হয়ে তা রূপ নিচ্ছে টানেল সংযোগ সড়কে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বার খুলে দেওয়ার যে পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের তার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে স্বল্পদৈর্ঘ্যরে এ সড়কটি। কারণ এর মাধ্যমেই সংযুক্ত হতে যাচ্ছে টানেল হয়ে একদিকে চট্টগ্রাম মহানগর এবং আরেক দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক। বঙ্গবন্ধু টানেল সংযোগ সড়কটি প্রস্থে হবে ১৬৫ ফুট। এই টানেল চালু হলে এর মধ্য দিয়ে প্রথম বছরেই অন্তত ৬৩ লাখ যানবাহন চলাচল করবে, যা ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। আর সব যানবাহন যাবে দক্ষিণ প্রান্তের এই সংযোগ সড়ক দিয়ে।

সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ জানান, শিকলবাহা থেকে আনোয়ারা সদর ও কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে আমরা এ বছর জুলাই মাসের মধ্যেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারব। ৬ লেনের এই সড়কের ৪ লেন হবে দ্রুতগতির গাড়ি চলাচলের জন্য। আর বাকি ২ লেন হবে ধীরগতির যানবাহনের জন্য। সংযোগ সড়কের জন্য টানেল নির্মাণ এবং উদ্বোধনের কাজ যাতে বিলম্বিত না হয়, সেজন্য সড়ক বিভাগ পুরোপুরি সচেতন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

সানবিডি/এনজে