তারল্য সংকটে বড় দরপতন পুঁজিবাজারে
:: প্রকাশ: ২০২২-০৪-০৪ ১৭:১৫:৪২
দেশের পুঁজিবাজারে তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। অর্থের সংকটে ব্যপক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারিরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলমান এ দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে অনাস্থা। আর এতে প্রকট হচ্ছে তারল্য সংকট।
বিনিয়োগকারীরা বলছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধ নিয়ে একটি গোষ্ঠী বাজারে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে ফায়দা লুটছে। পাশাপাশি ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংক মিলে ১১৬টি প্রতিষ্ঠানের সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার নেগেটিভ ইকুইটি সমন্বয়ের সীমা ভুল বোঝাবুঝি এবং পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) দ্বন্দের কারনে পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ছিল গত মাস জুড়ে। তবে এর প্রভাব কিছুটা কাটলেও তারল্যেও সংকট কোন ভাবেই দূর হচ্ছে না।
সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য মতে, তারল্য সংকটের কারণে প্রায় ১০ লাখ বিও হিসাবধারী বাজারে নিস্ক্রিয় রয়েছেন। পুঁজিবাজারে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে শেয়ার ও বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাব সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানটির হিসাবে বর্তমানে পুঁজিবাজারে মোট ২০ লাখ ৬৪ হাজার বিওধারী রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১১ লাখ বিও হিসাবে সক্রিয়ভাবে লেনদেন হচ্ছে। অর্থাৎ বাকি প্রায় ১০ লাখ বিও হিসাবধারী বাজারে নিক্রিয় রয়েছেন। তারা বাজার পর্যবেক্ষণ করছেন।
বর্তমান বাজার পরিস্থিতি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ আবু আহমেদ বলেন, দেশের পুঁজিবাজারে অর্থের প্রবাহে সংকট দেখা দিয়েছে। এতে পুঁজিবাজাওে নেতবাচক প্রভাব পড়ছে।
এদিকে সোমবার (০৪ এপ্রিল) রমজান মাসের দ্বিতীয় দিন দেশের পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। ব্যাংক-বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব খাতের শেয়ার বিক্রির চাপে এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে ৫৩ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ১৩৯ পয়েন্ট।
সূচকের পাশাপাশি উভয় বাজারে কমেছে লেনদেন ও অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম। এর ফলে রোববার (৩ মার্চ) আর্থিক খাতের ওপর ভর করে সূচক বৃদ্ধির পর আজ (সোমবার) নেতিবাচক ধারায় পুঁজিবাজারে লেনদেন হল। নতুন এই দরপতনে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার নিয়ে শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মধ্যে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে যে ‘বাজারে আরও দরপতন হবে’।
ডিএসইর তথ্য মতে, সোমবার বাজারটিতে ৩৮১টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ১১ হাজার ৯৫৬টি শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলো মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৬টির, কমেছে ২৯৬টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
লেনদেন হওয়া প্রায় সব শেয়ারের দাম কমায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ৫৩ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৭১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএসইর অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে কমেছে ৮ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট এবং ডিএস-৩০ সূচক কমেছে ১৯ দশমিক ২৫ পয়েন্ট।
এদিন ডিএসইতে ৮৩৬ কোটি ৬২ লাখ ৮৬ হাজার টাকার শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৮৩৬ কোটি ৬২ লাখ ৮৬ হাজার টাকার শেয়ার। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে।
ডিএসইতে সোমবার লেনদেনের শীর্ষে ছিল আইপিডিসির শেয়ার। এরপর ছিল ভিএফএসথ্রেড লিমিটেড, বেক্সিমকো লিমিটেড, লাফার্জহোলসিম, নাহী অ্যালুমুনিয়াম, বিডি ল্যাম্পস, জেনেক্স ইনফোসেস, জিএসপি ফাইন্যান্স, ইয়াকিন পলিমার এবং ফুয়াং ফুড লিমিটেড।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩৯ দশমিক ৮ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ৬৮৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে ২৮২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৯৬টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির দাম।
এ বাজারে ১৪ কোটি ৫৫ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর আগের দিন বাজারটিতে লেনদেন হয়েছিল ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ২৮ হাজার ৩৭৬ টাকার শেয়ার।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
এএ